Tuesday, December 1, 2015

সম্প্রতি দেখা মুভিঃ Hotel Transylvania 2

সম্প্রতি দেখা মুভিঃ Hotel Transylvania 2



বেশ অনেকদিন অপেক্ষার পর গতকাল Hotel Transylvania 2 দেখলাম।

শুরুটা as expected চমৎকার ছিল। কিন্তু ঘটনা যতই শেষের দিকে যাচ্ছিল ততই আশাহত হচ্ছিলাম। নিঃসন্দেহে “Hotel Transylvania” ড্রামাটিক, রোমান্টিক এবং দারুণ কমেডি নির্ভর মুভি ছিল। কিন্তু এর সিক্যুয়াল হিসেবে এই পর্বে ড্রামাটিক এনিমেশন থাকলেও কমেডি আর রোমান্টিসিজম অনেকাংশেই অনুপস্থিত ছিল।

Adam Sandler নিজে চমৎকার একজন কমেডি অভিনেতা। আর সেই ধারাই বজায় ছিল এই এনিমেশন মুভির প্রথম পর্বটিতে। কিন্তু দ্বিতীয় খণ্ডে এসে তার সেই কমেডি ধাঁচের দুষ্টামিতে অনেকটাই ভাটা পড়েছিল।

ড্রাকুলারের মেয়ে চরিত্র ‘Mavis’ এখানে চমৎকার মনে হয়েছে। সে একই ধারে বাবা’র মেয়ে হিসেবে ভালোবাসায় সিক্ত এবং তার সন্তানের জন্যে অকৃত্রিম ভালোবাসা দেখিয়েছে। মুভিতে সে তার সন্তানকে নিজের মত করে ‘স্বাভাবিক’ করে বড় করার জন্যে সিদ্ধান্ত নেয়। আর সেই সিদ্ধান্ত অনুসারেই সে তার বাবার হোটেল তথা ‘ড্রাকুলা অরণ্য’ ছেড়ে তার স্বামী ‘Jonathan’ এর শৈশব কাটানো শহরে ছুটে যায়। নিজে থেকে সন্তানের জন্যে একটা নিরাপদ ভুবন নির্বাচনের জন্যে উদগ্রীব হয়ে উঠে। চরিত্রের এই অংশটাই এই মুভির মুল আকর্ষণ মনে হয়েছে। যেখানে সে নিজে ড্রাকুলা হয়েও মন থেকে নিজের সন্তানকে একজন ‘মানুষ’ রূপে সে দেখতে চেয়েছে। নিজের অস্তিত্বকে তার সন্তানের উপর চাপিয়ে দেবার চেষ্টা করেনি।

‘Jonathan’ এই মুভিতে নায়কের ভূমিকায় থাকলেও তাকে সবসময়ই আমার সহায়ক চরিত্র হিসেবেই মনে হতো, এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি।

বাকি চরিত্রদের মধ্যে এইবারে ঘটনার প্রেক্ষিতেই বেশ স্বাভাবিকতা দেখা গেছে। কিন্তু তারা সবই নিজেদের ভয় দেখানোর ক্ষমতা হারিয়েছে। তবে সেইটা নিয়ে নিজেদের মাঝে কোন ধরণের আক্ষেপ দেখা যায়নি, বরং এই ব্যাপারটাকেই তারা বেশ উপভোগ করেছে।

শেষ অংশটাতে পরিবারের বন্ধনটাকেই বড় করে দেখানোর চেষ্টা করা হয়েছে। পরিবার, তা যেমনই হোক, যত রকম ভিন্নতাই থাকুক না কেন এদের মাঝে, দিন শেষে সবই পরিবারের সদস্য। আর এই ব্যাপারটাই মুভির শেষে আরও একবার স্পষ্ট করে বুঝতে পারবে দর্শকেরা।

যাই হোক, আশানুরূপ নাহলেও মুভিটি একেবারেই ফেলে দেবার মত নয়। তবে কেউ যদি আমার মত মুভিটার প্রথম খণ্ডের মত চমৎকার কমেডি মুভির জন্যে মুখিয়ে থাকে তারা মুভিটি দেখার পর কিছুটা হলেও হতাশ হবে। তবে কেউ যদি দেড় ঘণ্টা নষ্ট করে মুভিটা না দেখে তবে সে প্রকৃত অর্থেই অনেক কিছুই মিস করে যাবে।


Read More »
Tuesday, October 27, 2015

অসমাপ্ত স্বপ্ন



বুলেটটা ছুটে আসছে অসম্ভব দ্রুত গতিতে, ঠিক যেমনি করে বুলেটটির ছোটার কথা ছিল। কিন্তু আশ্চর্যজনক মনে হলেও আমি বুলেটটির এগিয়ে আসার প্রতিটি ধাপ স্পষ্ট দেখতে পারছি। ইচ্ছে করলেই ছুটে গিয়ে আমি এখন বুললেটির গতি পরিবর্তন করে দিতে পারি, কিংবা নিজে সরে গিয়ে বুলেটের আঘাত করার রেঞ্জের বাইরে চলে আসতে পারি। অবিশ্বাস্য হলেও আমার এখন এর কোনটিই করতে ইচ্ছে করছে না। ভেতর থেকে আমি প্রস্তুত ছিলাম, এটা যে হবেই তা আমার জানা ছিল। কিংবা বলা যেতেই পারে এটা আমার স্বেচ্ছায় মৃত্যুকে পরখ করার মত একটা বিষয়। কিংবা তোমাদের চোখে যা আত্মহত্যা, আমি সেটাই করছি এই মুহূর্তে…
Read More »
Friday, October 2, 2015

ব্লু স্ক্রিন অফ ডেথ মেসেজ বাংলায় [ফান পোষ্ট]

Windows অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করেছেন কিন্তু একবারের জন্যেও Blue Screen of Death জিনিষটা কারও সামনে আসেনি, এমন লোক বোধ করি স্যাটেলাইট দিয়ে খুঁজেও পাওয়া যাবে না। Windows অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে আপনি গ্রহান্তরী হয়ে যান, তবুও উইন্ডোজ ব্যবহারকারী হিসেবে আপনাকে অন্তত একবার হলেও এই নীল স্ক্রিন দেখতেই হবে।

আর যদি এমন কোন ব্যক্তিকে অলৌকিক ভাবে পাওয়া যায়, তবে Microsoft এর উচিৎ উক্ত ব্যক্তিকে বিশেষ সম্মাননা দিয়ে এই অসম্ভব কিভাবে সম্ভব হয়েছে তা তার কাছ থেকে খুব গোপনে জেনে নেয়া।

যাই হোক, ব্লু স্ক্রিন ডেথ যদি আমাদের বাংলা ভাষায় একটু দুষ্টামি করে কেউ লিখে দিতো তাহলে তার অবস্থা কেমন হত তার কয়েকটি নমুনা তৈরির চেষ্টা করলাম।



  নমুনা – ১



একখান পরবলেম পাওয়া গেছে আর হিল্লিগ্গাই আপ্নের জানালাডা বন্ধ কই দিছি, যাতে এই পরবলেমের লাগি আফনের কম্পুটারের কুনু ক্ষতি না অয়।

যাইগ্যা সেই কতা, এই ঘটনা যদি আফনে জিন্দিগির পরথম বার দেইখ্যা থাকেন তইলে এত্ত টেনশন লওনের কিছু নাই। মাথাডা ঠাণ্ডা করি কম্পুটারডা রিইসটাট মারেন, সব ঠিক হই যাবো। মাগার তারফরেও যদি সমস্যাডা প্রবলেমের মত করি পিছে পিছে আইতে থাকে তইলে নিচে যেবা করি কইচ্ছি সেবা সেবা করি কাম করেনঃ

বেবাক্তের আগে চেক করুইন যে আফনের হাড্ডিস্কো জায়গা জিরাত কিছু হইলেও বাকি আছে, আর না থাইকলে কিছু কিনি লন। তারফর চিন্তা করি দেখুইন যে আফনে নয়া নয়া কুনু ডেরাইভার আফনের কম্পুটারো লাগাইছুইন কি না। লাগাই থাইকলে সেইডারে আফডেট করুইন ঠিকঠাক মত। আর তারফরেও যদি সমস্যা দেহা যায়, তইলে আফনের ভিড্যু কার্ডটা খুইল্যা নয়া একখান লাগাই দেখবার পারেন।

এরফর ধরুইন যদি এই ঘটনাডা যাইবার না চায় তইলে আফনের কম্পুটারের বাসাস নামের জিনিষটারে একটু চেক করুইন। আফনের বায়াস মেমরীত যদি আগেত্থুন ক্যাশিং বা ছায়াযুক্ত ঘটনা চালু কইরা থাকুইন তইলে দৌড়াই ঐসব বন্ধ করুইন যে। তবে এইসব অকাম করণের লাগি যদি কম্পুটারের জানালা গলাই নিরাপদে একটু ঢুইক্কা দেখন লাগে তইলে কম্পুটারডা রিইসটাট মারি কিবুডেত্থুন ফাংশুনের ৮ নুম্বুর বাটুনডা চাপতে থাকুইন। দেখবেন ফাংশুনের ৮ নুম্বুর বাটুন চাপুনের ফরে একখান নয়া মেনু আইবো, ঐখানেত্থুন টিপ মারি ফেইফ মুড চালু করি ফালাইবেন।

ফ্রযুক্তিগত তইথ্য গুলা হইলঃ
*** থাম ব্যাটা পাকনাঃ ০ গুন ০০০০০০ “৮” এর “ই”

ময়লার ডিব্বার হিসাব কিতাব শুরু করি শেষও হই গেছে।
এইসব আকডুম বাগডুম কতা আফনের সিস্টেমের মাতাব্বরের কাছে কইন,
হেতে চুখ বন্ধ করি সিসটেমের রিইসটাট বাটন চাপি সব ঠিক করি ফেইলবো।



নমুনা – ২



আফনের কম্পুটারুর জানালাত এগ্গান ফ্রুবলেম চলিচ্ছিল। আফনেরে ঐডার হাতেত্থুন বাঁচানির লাগি আফনের কম্পুটারডা মুই বন্ধ করি দিছি। সেই বিজাইত্তা এই ফ্রবলেমডা করিচ্ছিল ঐডার নাম হইলঃ খবিসকাআওলাদ.ওয়াই-এর-দুই-পাশে-এস

ব্যবহারকারী-সূচিত-পরিবর্তনে-বিপর্যস্ত

আফনে মনে হয় এই সমস্যাডা এই পরথম দেখতেছেন। আমি থাইকতে আফনের চিন্তার কিস্যু নাই, খালি কম্পুটারডা রিইসটাট মারেন। মাআর বেয়াদ্দপ সমস্যাডা যদি তারফরেও না যায় তইলে নিচের কথামত কাম করি যানঃ

বেবাক্তের আএ আমারে কানে কানে কইনচেন দেহি, আফনে কি আফনের কম্পুটারো আমারে না বলি কুনু যন্তরপাত্তি লাগাইছেন না কি? আর টনা যদি ইরাম না হই তইলে চিন্তা করি দেখুইন তো, আফনের জানালায় নতুন কুনু রঙ মানে ফ্রোগ্রাম ইন্সটল দিছিলেন কি না? যদি ইরাম কিছু করি থাকেন তইলে বেবাক্তের আএ এই বাজে জিনিষ গুলি যেইসব বেয়াদপ বানাইছে ওগোর কাছেত্থুন এইগুলির আপডেট যুগার করেন। তারপর দেখবেন ঐসব আপডেট কম্পুটারের জানালাত লাগানি মাত্তর সমস্যা সব দৌড়াই পালাইবো।

মাগার ঘটনা যদি ইরাম কিছু না হয় বা উফরের কাম করনের ফরেও সমস্যা ফিরা ফিরা আই ফরে তইলে ঐসব বাজে যন্তরপাত্তি আফনের কম্পুটারেত্থুন খুলি হালাই দেন। আফনের বায়াস মেমরীডারে কন ঠিকঠাক মত কাম করতি। আর কথা না শুনলে হেতের কানে ধরি ক্ষেমতা কমাই আগের মত করি দেন।

ফ্রযুক্তিগত তইথ্য গুলা হইলঃ
*** থাম ব্যাটা পাকনাঃ ০ গুন ০০০০০০ “ই” এর “২”
*** খবিসকাআওলাদ.ওয়াই-এর-দুই-পাশে-এস – এর ঠিকানা লই গন্ডোগোল লাগিচ্ছে সিস্টেমের ভিত্তে।



নমুনা – ৩


  
  
জানালার ভিত্তে এই বাজে প্রোগ্রামডা বিরক্ত করবার লাগছিল, তাই বিরক্ত হই জানালা বন্ধ করি দিছি

* অখন আফনের যদি ঐ বদ ফ্রোগ্রামডার প্রতি দরদ উথলাই উঠে তইলে পরে এস্কেপ বাটন চাপি আবার জানালাডা খুলি দেন।

* মাগার আমার মত আফনেরও যদি মনে অয় ফ্রোগ্রামডা বিজাইত্তা আছিল তইলে কিবুডেত্থুন এন্টার চাপি ফ্রোগ্রামডা বন্ধ করি দেন। তয় মনে রাইখ্যেন, আফনে যদি ঐ ফ্রোগ্রামডার লগে এর মইধ্যে কুনু লেনদেন করি থাকেন তইলে ঐডার হিসাব কিন্তু এন্টার টিপনের লগে লগে হারাই যাইবো।

* এইতা যদি বেশি ভেজাইল্লা অয় তইলে কিবুডেত্থুন কন্ট্রোল পিলাস অলটার পিলাস ডিল বাটুন গুলি একলগে চাইপবার পারেন। তয় কথা কিন্তু আগেরডাই, জানালার মইধ্যে ঐ বিজাইত্তা ফ্রোগ্রামের লগে যেই সব লেনদেন করছিলেন তার হিসাব কিন্তু আমি দিবার পারুম না, এইডা আমার সাফ কতা।



তো আর দেরি কিল্লাই! তাত্তারি কিবুডেত্থুন এন্টার চাপি দেন,
আর তা না হইলে এস্কেপ চাপি বদ প্রোগ্রামডা চালু করি লন দ্রুতঃ অকা?





ছবি এবং তাতে ব্যবহৃত কথা গুলি নিতান্তই দুষ্টামির খাতিরে লিখেছি, কাউকে আঘাত করার উদ্দেশ্যে নয়। আশা করছি মজা করেই সবাই ব্যাপারটাকে গ্রহণ করবেন।

সকলের জন্যে শুভকামনা :)



Read More »
Thursday, September 24, 2015

কল্প গল্পঃ হোম অফ আলট্রন এণ্ড আওয়ার্স



পঞ্চদশ শতাব্দীর শুরুতে আলট্রনসেপিয়েন্সের ধারণার প্রকাশ ঘটে। তবে বাকি সব ধারণার মত একে ঝুলে থাকতে হয়নি, হয়নি মুখ থুবড়ে শুধুই বিজ্ঞানের তত্ব হিসেবে পড়ে থাকতে। বিজ্ঞান কাউন্সিল একে পরিপূর্ণ সমর্থন দান করে। ফলস্বরূপ পরবর্তী ৩০ বছরের মাথাতেই প্রথম আলট্রনসেপিয়েন্সের জন্ম হয়। এদের প্রাথমিক ভাবে ল্যাবেই বড় করা হলেও তাদের বিকাশ প্রাকৃতিক উপায়েই ঘটে। বিজ্ঞান আর প্রকৃতির সমন্বয়ে খুব অল্প সময়েই এরা বড় একটা গোষ্ঠীতে পরিণত হয়। প্রথম দিকে প্রতিকূলতা থাকলেও শেষে একে অনেকেই আলট্রনসেপিয়েন্স জন্ম দেবার আকাঙ্ক্ষা প্রকাশ করতে থাকে। এর ৭০ বছরের মাথাতেই আলট্রনসেপিয়েন্সের জন্যে আলাদা করে মহাদেশ নির্দিষ্ট করে দিতে হয়। আর বিজ্ঞান কাউন্সিল তা খুব সানন্দেই করে।

পঞ্চদশ শতাব্দীর ৫০০ বছর পার হবার পর যখন বিশ্বের তিন মোড়লের নাকের ডগা থেকে ছ’ছয়টি নিউক্লিয়ার বেস নিয়ন্ত্রণ হারায় তখনই বিশ্ববাসী বুঝে যায় যে তাদের দিন ফুরিয়ে এসেছে। আর এই ধারণা প্রমাণ হতে খুব বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। অল্প ক’দিন পরেই অজ্ঞাত কোন গোষ্ঠী এই ছটি বেস থেকে ১৬ টি নিউক্লিয়ার বোমা উৎক্ষেপণ করে। গুরুত্বপূর্ণ সকল শহরে ঐ সব বোমা বিষ ফোড়ার মত অবস্থান নেয়। তবে আক্রমণ যেখানেই হোক ক্ষতি সবার প্রথম তৃতীয় বিশ্বেরই ঘটে। উন্নত শহরের তুলনায় আড়াই গুন মানব সভ্যতা নষ্ট হয় তৃতীয় বিশ্বের। প্রায় সকল নেতা এবং দিক নির্দেশক এই হামলায় মারা যায়। বাকি যারা ছিল তারা সকল ক্ষমতা বিজ্ঞান কাউন্সিলের কাছে হস্তান্তর করে।

হামলার বছর কয়েক বাদে এক উগ্রবাদী চার্চের গোপন দল এই হামলার পরিপূর্ণ দায়ভার গ্রহণ করে। তাদের ভাষ্যমতে ঈশ্বরের ক্ষমতাকে খর্ব করে যখন মানুষ আলট্রনসেপিয়েন্স তৈরি করছে তখন তাদের সম্পূর্ণরূপে বন্ধ করতে তারা এই হামলা চালায়। কিন্তু মজার ব্যাপার হল এরা আলট্রনসেপিয়েন্সদের মহাদেশে কোন নিউক্লিয়ার বোমা ফেলতে সাহস দেখায় নি। এই উগ্রবাদীদের সম্পর্কে একটা মিথ প্রচলিত আছে। ধারণা করা হয় হামলার ঠিক ৪৮ ঘণ্টা পূর্বে এই গোপন উগ্রবাদী সংস্থার নেতারা উক্ত এলাকায় পৌঁছে যেত। সকল কিছু যখন নিশ্চিত তখন ঐ শহরে বসেই নেতারা নিজেদের সাথে সাথে লক্ষ লক্ষ মানুষের কবর তৈরি করত। নিজেদের নির্দেশনায় এমন প্রাণনাশে নিজেদেরই শাস্তি দিত তারা।

হামলা পরবর্তী মানব সভ্যতার যে ক্ষতি সাধিত হয় তা শুধু সভ্যতাকেই নয়, মানুষের মন থেকে বিশ্বাসকেও ধুয়ে মুছে দেয়। একমাত্র পরিবারের সদস্য ছাড়া কেউ কারও দিকে তাকাত পর্যন্ত না। আর অন্যের উপর নির্ভরতা? সে প্রথম হামলার সময়ই সকলের মাঝ থেকে উবে গিয়েছিল। হামলাতে যারা আহত হয়েছিল কিংবা কাছাকাছি এলাকাতে অবস্থান করছিল তারা সকলেই এক মাসের মাথায় অতিরিক্ত রেডিয়েশনে মারা যায়। কেউ তাদের জন্যে এগিয়ে আসেনি। রেডিয়েশনের প্রভাব বাড়তে থাকলে সকলে বাধ্য হয়ে মেরু অঞ্চলের দিকে অবস্থান নিতে থাকে। এই প্রথম তৃতীয় বিশ্বের সাথে এক কাতারে দাড়াতে বাধ্য হয় উন্নত বিশ্বের মানুষ।

আলট্রনসেপিয়েন্স মানব সভ্যতা থেকে অনেক উন্নত এবং মুক্ত চিন্তার হলেও তাদের প্রতিবন্ধকতা ছিল। এরা কখনোই তাদের সভ্যতা মানব সভ্যতা ছাড়া এগিয়ে নিতে সক্ষম নয়। উন্নত একটি শরীর দিতে গিয়ে এদের প্রজনন ব্যবস্থাকে সম্পূর্ণ রূপে বের করে নিয়ে আসতে হয়। তাই আলট্রনসেপিয়েন্স সর্বদা মানব সভ্যতার উপর নির্ভরশীল ছিল। প্রথম প্রথম ধারণা করা হত এদের আরও প্রসার ঘটলে প্রজনন অংশ এদের ফেরত দেয়া হবে। কিন্তু সময়ের সাথে প্রকৃতিও এই আলট্রনসেপিয়েন্সদের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয়। ফলে কখনোই আর একটি আলট্রনসেপিয়েন্স থেকে আরেকটি আলট্রনসেপিয়েন্স তৈরি করা যায়নি। ক্লোনিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে আলট্রনসেপিয়েন্সকে কপি করার চেষ্টাও তারা করেছিল। কিন্তু বিচিত্র কারণে প্রকৃতি তাকে এদের মাঝে অবস্থান নিতে দেয়নি। আলট্রনসেপিয়েন্সের ক্লোন তৈরি করার ৫ম দিনের মাথায় আন্তঃ রক্ত চলাচল ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়ে। পরপর কয়েকটি আলট্রনসেপিয়েন্সের যখন একই হাল হয় তখন বিজ্ঞানীরা ক্লোন করা ছেড়ে দেয় এবং চিরদিনের মত নিষিদ্ধ ঘোষণা করে।

বিজ্ঞান কাউন্সিলের হস্তক্ষেপে দীর্ঘ সময় পর পোলার মনব ফ্যামিলি গুলিতে আবার সভ্যতার জন্ম হয়, নিজেদের সমাজ ব্যবস্থা গড়ে উঠে। অবশ্য এই প্রাপ্তির পুরোটার নাম দাবীদার ‘মিকি’র। মিকি হল বিজ্ঞান কাউন্সিলের মুক্ত চিন্তা এবং স্বতন্ত্র ব্যবস্থা। সে সকল ডাটা ঘটে তার থেকে রিপোর্ট না করলে এই পদ্ধতির শুরুতেই বিজ্ঞান কাউন্সিল মুখ থুবড়ে পড়ে যেত। মিকির তথ্য উপাত্তের ভিত্তিতেই বিজ্ঞান কাউন্সিল সহজেই একটা সিদ্ধান্তে পৌছতে পারত। দীর্ঘ সময় নিয়ে তারা পরিবার গুলিকে প্রতিস্থাপন করেছে। পৃথিবীর জোন অনুসারে তাদের আলাদা আলাদা অবস্থানে নিয়ে গেছে। জাতিগত সংমিশ্রণ ঠেকাতে নিজেদের মধ্যেই সখ্যতা বাড়িয়ে নেবার সুযোগ করে দিয়েছে। ফলাফলে জাতী হিসেবে তাদের আলাদা সত্তা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল।

মিকির সম্বন্ধে বিজ্ঞান কাউন্সিল শুধু এতটুকুই জানে যে মিকি’র মুক্ত চিন্তা কিংবা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স তৈরি কাজ পর্যন্ত মানুষ এর কাজ করে দিয়েছে। তারপর ধীরে ধীরে সে নিজেই নিজের উন্নয়ন ঘটিয়ে নিয়েছে। অনেকের ধারণা আলট্রনসেপিয়েন্সদের দিয়ে সে নিজেকে ধীরে ধীরে গড়েছে। আর এই কারণেই আলট্রনসেপিয়েন্সদের জন্যে মিকির এত দরদ। ঘটনা যাই হোক দুটি সভ্যতার কেন্দ্রীয় নির্দেশ দাতা, তথ্য সমন্বয়ক আর বিশ্লেষক রূপে মিকি তার অবস্থান ঠিকই তৈরি করতে পেরেছিল। তার বোন এতটাই শক্তিশালী ছিল সে সমসাময়িক আর কোন প্রযুক্তিই তার ধারের কাছ দিয়ে যেতে পারেনি। অনেকেই মিকির পরিবর্তে ভিন্ন আরেকটা সিস্টেম তৈরি করার চেষ্টা করেছে। কিন্তু মিকির মত স্বতন্ত্র রূপে আর কোন সিস্টেমই টিকতে পারেনি। যারা মিকিকে তৈরির কাজ করেছিল তারা স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে যে মিকিই তাদের জীবনের সর্বোচ্চ সম্মানিত কাজ।

বলা হয় পোলার এরিয়া গুলি উগ্রবাদীরা ছেড়ে দেয় কারণ এখানেই তারা তাদের পরবর্তী প্রজন্মকে বাড়িয়ে তোলার প্লান করেছিল। কিন্তু যেভাবেই হোক তাদের কোন অস্তিত্ব পোলার এরিয়াতে পাওয়া যায়নি। তারা কোথায় আছে, কত জন আছে এ নিয়ে বরাবরই নিরাপত্তা সংস্থা ধোয়ার মধ্যেই রয়ে গিয়েছে। তবে তারা আছে এটাও নিশ্চিত ছিল। বেশ কয়েকবারই নিরাপত্তা সংস্থার নেটওয়ার্ক তারা ভেঙ্গে দিতে চেয়েছিল। সফল হতে হতেও তারা এই নিয়ন্ত্রণ পায়নি। নিয়ন্ত্রণ সংস্থার পাশাপাশি উগ্রপন্থী গ্রুপটি বিজ্ঞান কাউন্সিলের সকল নেটওয়ার্ক ডাওন করে সার্ভারের নিয়ন্ত্রণ নিতে চেয়েছে। আর একবার নয়, বেশ অনেকবার করেই তারা এই পরিকল্পিত হামলা চালিয়েছে। কিন্তু মিকি’র স্বয়ংক্রিয় ফায়ারওয়াল ব্যবস্থা আর মুক্ত চিন্তার প্রযুক্তির কাছে বরাবরই তারা ধরা খেয়েছে। একটা বাগ পর্যন্ত কোন সার্ভারে প্লান্ট করতে সক্ষম হয়নি তারা। তবে গুরুত্বপূর্ণ অনেক ডাটাই কপি করতে পেরেছিল। তবে যতই গুরুত্বপূর্ণ ডাটার কপি করুক না কেন, নতুন সমাজ ব্যবস্থার কোন তথ্যই তাদের হাতে আসেনি।

ত্রয়োদশ শতাব্দীতেই রবোটিক শিল্পের বেশ প্রসার ঘটে। প্রায় সকল কাজের জন্যে আলাদা আলাদা রোবট তৈরি হয়। যাদের পর্যাপ্ত পরিমাণে ক্রেডিট থাকত তারা আবেদন করলে প্রায় সকল রোবট কিনতে পারত। তবে সকলের এই সঙ্গতি হত না। বাধ্য হয়েই তারা গৃহপরিচারিকা’র রোবটের আবেদন করত। আর খামারিরা করত কর্মী রোবটের আবেদন। কিছু উন্নত ফার্ম ছাড়া ঐ সব রোবট কারও ভাগ্যে জুটত না। হামলার প্রথমদিকে রোবট শিল্পেরও মৃত্যু ঘটে। তবে সমাজ ব্যবস্থা পুনঃ প্রতিষ্ঠা লাভের পর মিকি পুনরায় রোবট শিল্পকে নিয়ে কাজ করতে থাকে। বছর খানিক বাদেই রোবট শিল্পকে তার পূর্বের অবস্থানে নিয়ে আসে। তখন যারা আবেদন করার মত সাহস দেখিয়েছে তাদের প্রায় সকলেই গ্রহস্থলির কাজের রোবট পেয়েছিল।

তবে বিজ্ঞান কাউন্সিল এবং মিকি এই ব্যবস্থার বিপরীতে এক শক্ত নির্দেশনা প্রদান করে। মর্যাদা যেমনই হোক, যে এলাকার মানুষই হোক না কেন উৎপাদন মুখী কাজ, খামারির কাজ এবং রান্না সংক্রান্ত সকল কাজেই মানুষকে সরাসরি অংশগ্রহণ করতে হবে। এবং কোন অবস্থাতেই সেখানে রোবটের উপর নির্ভর করা চলবে না। রোবট সর্বোচ্চ সাহায্যকারী হিসেবে এইসব কাজে অংশগ্রহণ করতে পারে। মেশিন সমমানের রোবটই কেবল এই সকল কাজে বিলি করা হত। নিরাপত্তার রোবট খুব অল্প পরিমাণে তৈরি করা হয়। ঠিক যেই পরিমাণে প্রয়োজন সেই পরিমাণেই নিরাপত্তার রোবট তৈরি হত।

রবোটিক শিল্প এবং মানব সভ্যতার পরিপূর্ণ নিরাপত্তার হাল বিজ্ঞান কাউন্সিল অথবা মিকির নিয়ন্ত্রণে আসার পর মিকি রেডিয়েশন যুক্ত এলাকা গুলি নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসার প্রকল্প চালু করে। এবারও মিকি ব্যর্থ হয়নি। সফলতার সাথেই খুব অল্প সময়ে বেশ কিছু এলাকার হতে পরিপূর্ণ রেডিয়েশন নিয়ন্ত্রণে এনে সেখানে মানব পরিবারের বেড়ে উঠা নিশ্চিত করে। প্রথমে দুটি পরিবারকে কোন শর্ত ছাড়াই সেখানে পাঠানো হয়। তবে একেবারে নিঃশর্তও ছিল না। মিকির যে কোন নির্দেশ তারা মেনে নিতে বাধ্য ছিল। তারপর বছর কয়েক বাদে যখন নিশ্চিত করা গেল এখানে মানব সভ্যতার অবস্থান দেয়া সম্ভব তখনই পোলার এরিয়ার পরিবার গুলি উষ্ণ এলাকায় যাবার আবেদন পত্র জমা দিতে থাকে। কিন্তু এখন আর আবেদন পত্র নয়, নির্দিষ্ট পরিমাণ ক্রেডিট এবং বিজ্ঞান কাউন্সিল হতে মিকির অনুমোদনই মূল ব্যাপার হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

খুব অল্প কিছু পরিবারকে প্রাথমিক ভাবে উষ্ণ এলাকাতে যাবার অনুমতি দেয়া হয়। আর এই অনুমতির পূর্ণ স্বাধীনতা মিকির নিজের একার। বিজ্ঞান কাউন্সিলের বেশ কয়েকজন সদস্য এই নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে আসতে চেয়েছিল। কাউন্সিল মিটিং এ বেশ কয়েক বার করেই তাদের প্রস্তাবনা পেশ করে। কিন্তু বিজ্ঞান কাউন্সিলের প্রধান মহামান্য লুকাস প্রতিবারই তাদের প্রস্তাবনা বাতিল করে দেন। আর এই নিয়ে মিকির সিদ্ধান্তের বিপরীতে তাদের একটা ক্ষোভ জমা হতে থাকে ভেতর ভেতর। যেহেতু নিয়ন্ত্রণ পাওয়া সম্ভব নয় তাই সবাই চেষ্টা করছিল ব্যাপারটাকে দেখেও না দেখার মত ভান করার। এর পেছনে অবশ্য বেশ কারণও ছিল। নিজেদের বিশাল পরিবার আর গোষ্ঠীকে এরা উষ্ণ এলাকায় নিয়ে যেতে চাইছিল। কিন্তু অনুমতি না মেলায় তাদের আশার প্রদীপ নিভিয়ে দিতে বাধ্য হয়।

শুধু রবোটিক শিল্পেরই নয়, চিকিৎসা ব্যবস্থারও ব্যাপক উন্নতি সাধন করে মিকি। প্রতি এলাকাতেই একটি করে সেফ হোম প্রতিষ্ঠা করে। পাশাপাশি বেশ অনেক গুলি হসপিটালও স্থাপন করা হয়। অবস্থা বুঝে কোন রোগী যদি সেফ হোমে প্রবেশ করত, তাহলে ৩ থেকে ৭ দিনের মধ্যেই তাকে নীরোগ অবস্থায় পরিবারের কাছে ফেরত দেয়া হত। প্রাথমিক ভাবে ক্লোনিং করে এই ব্যাপারটা ঘটাচ্ছে বলে একটা গুঞ্জনের সৃষ্টি হয়। কিন্তু এই গুঞ্জনের কোন ভিত্তি কেউ দিতে পারেনি। ডি. এন. এ. পরীক্ষা করে শেষ পর্যন্ত নিশ্চিত করা হয় এখানে কোন ক্লোনিং ব্যবস্থারই সহায়তা নেয়া হয়না। প্রয়োজনে নতুন কোষ সৃষ্টির মাধ্যমে নীরোগ একটি শরীর ফিরিয়ে দেয়া হয়। তবে সকলেই সেফ হোমে যাবার সুযোগ পেত না। মিকি নির্ধারণ করত রোগের পরিমাণ। আর তার নির্ধারণের ভিত্তিতেই রোগীকে এই বিশেষ সুবিধা দেয়া হত। তবে একটি ব্যাপার ছিল। কেউ একবার যদি সেফ হোমে যেতে পারত তবে তার পরবর্তী ২টি জেনারেশনের মধ্যে কেউ না কেউ ঠিকই উষ্ণ অঞ্চলে যাবার অনুমতি পেয়ে যেত। তাই প্রতিটি পরিবারই প্রতি রাতে প্রার্থনা করত, অন্তত একবার হলেও সেফ হোমে যাবার। ক্ষুধ্ব হয়ে অনেকেই বিজ্ঞান কাউন্সিলের কাছে এই ব্যাপারে নালিস জানালে বিজ্ঞান কাউন্সিল মিকির হাত থেকে নিয়ন্ত্রণ নেবার আরও একটা সুযোগ পেয়ে যায়। এবার তারা বেশ গুঞ্জন তুলে আবারও নিজেদের দাবী প্রকাশ করে কাউন্সিল মিটিং-এ। কিন্তু বরাবরের মত কাউন্সিলের সর্বোচ্চ পরিচালক মহামান্য লুকাস তাদের আবেদন, দাবী নাকচ করে মিকির উপর নিয়ন্ত্রণ বহাল রাখেন। যদিও বেশ কয়েকবারই প্রমাণ সহকারে এইসব দাবীর উপস্থাপন ঘটে। তিনি সব জেনেও সকলকে শান্ত থাকার পরামর্শ দেন।

সেফ হোম প্রতিষ্ঠার পর পর উগ্রপন্থীদের আবার মাথা চাড়া দিয়ে উঠতে দেখা যায়। তারা দাবী করে তাদের নির্বাচিত স্থানে কয়েকটি সেফ হোম তৈরি করে দেয়া না হলে তারা সকল সেফ হোম গুড়িয়ে দিবে। বিজ্ঞান কাউন্সিল ফু দেবার মত করে এই দাবী উড়িয়ে দেয়। আর তারপরই এদের নেটওয়ার্ক বেশ কয়েকবার সেফ হোমের নেটওয়ার্কে ঢুকতে চেষ্টা করে। কিন্তু সরাসরি মিকির তত্ত্বাবধায়নে থাকার কারণে প্রতিটি হামলার বিপরীতে ওদের সার্ভারই বাগ দিয়ে ভরে যেতে থাকে। মিকি সরাসরি হামলা না চালিয়ে হামলার বিপরীতে হামলার মাধ্যমে উগ্রপন্থীদের কার্যক্রম বন্ধ করে দেয়। শেষ পর্যন্ত এরা সেই হামলা করা হতে ক্ষান্ত দেয়।

উষ্ণ শহরের বাসিন্দারা উন্নত কিছু ব্যবস্থা পেত জীবনকে সহজ করার জন্যে, কিন্তু উৎপাদন এবং রান্নার কাজে তাদের কোন ছাড় দেয়া হয় নি। এখানেও তাদের নিজেদের উৎপাদন এবং রান্নার কাজ নিজেদেরই করতে হত। প্রথম প্রথম বেশ ঝামেলা হলেও অল্প ক’দিনেই সব বাগে নিয়ে আসে। পোলার শস্য সরাসরি এখানে উৎপাদন করা যেত না। এখানে ভিন্ন দানার ভিন্ন সকল দানাদার বস্তুর উৎপাদন করতে হত। ফলে তাদের পরিচিত রন্ধন ব্যবস্থারও পরিবর্তন করতে হত। টিকে থাকতে মানুষ সবসময়ই নিজেদের রাস্তা তৈরি করে নিয়েছে। এবারেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। প্রথম কেউ পোলার এরিয়া হতে এলে এক মাসের রেশন সহ নিয়ে আসতে পারত। এই এক মাসের মধ্যে তাদের খাদ্য অভ্যাসের পরিবর্তন করে নিতে হত। পরিবারের সংখ্যা বাড়তে থাকলে সেটা আর খুব বড় কোন সমস্যা হয়ে থাকল না। এক মাসেই নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসতে সমর্থ হত।

আলট্রনসেপিয়েন্স কিন্তু এখনো মানব সভ্যতার উপর নির্ভর করে ছিল। দীর্ঘ আয়ু থাকার কারণে বেশ কয়েক বছর তাদের উৎপাদন বন্ধ থাকে। কিন্তু এতে তাদের সংখ্যার খুব একটা হেরফের হয় না। উষ্ণ শহরে আসার পর প্রতিটি পরিবারকে নতুন সন্তান নেবার জন্যে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া হত। তারপর পরিবারে ভ্রূণের জন্ম হওয়া মাত্র তাকে মাতৃ গর্ভ থেকে বের করে আনা হত। এরপর তাকে নিরাপদ ক্লোন করে ক্লোন ভ্রূণটি মাতৃ গর্ভে প্রতিস্থাপন করা হত। আর মূল ভ্রূণ হতে জন্ম হত আলট্রনসেপিয়েন্সের। আলট্রনসেপিয়েন্সদের জন্ম এবং বেড়ে উঠা যদিও ল্যাবে হত। কিন্তু তারা প্রকৃতির ছোঁয়াতেই সামনে এগিয়ে যেত। আর এদের নিয়ে কোন এক্সপেরিমেন্ট কখনোই করা হয়নি। একটা নির্দিষ্ট সময় পর এদের আলট্রন এরিয়াতে দিয়ে আসা হত।

এদিকে ক্লোন ভ্রূণ হতে নীরোগ সকল শিশু বেড়ে উঠতে লাগল। রোগ শোক প্রায় ৬০ শতাংশ কমে আসল এই ক্লোনিং প্রযুক্তি ব্যবহারের ফলে। এরা কোন ভাবেই কোন দিক থেকে পিছিয়ে থাকেনি। প্রকৃতি এদেরও পরম মমতায় বুকে টেনে নিয়েছিল। কৃষি, চিকিৎসা, শিক্ষা, সংস্কৃতি, নিরাপত্তা বিভাগ এমনকি বিজ্ঞান সংস্থাও তাদের মেধা সত্ত্বের উন্নতি দেখে ডেকে নিতে বাধ্য হয়। বিজ্ঞান কাউন্সিলেও তাদের অবস্থান নিশ্চিত করা হয়। যতই দিন এগুতে থাকে পোলার এরিয়া হতে ততই পরিবারের ডাক কমে আসতে শুরু করে। দিনে দিনে নিরাপদ উষ্ণ শহর ভরে উঠতে থাকে। সেখানে যে সংস্কৃতির সৃষ্টি হয়েছে তা পোলার এরিয়ার সভ্যতা হতে অনেক ভিন্ন। তবে শুধু মাত্র মানুষের মধ্য থেকেই আলট্রনসেপিয়েন্স নেয়া হয় বলেই কিছু পরিবার এখনো উষ্ণ শহরে আসার অনুমতি পায়।

এইসব যখন মিকির তত্ত্বাবধায়নে চলছিল তখন আলট্রনসেপিয়েন্সও থেমে থাকেনি। তারা নিজেদের সভ্যতা প্রতিষ্ঠা করে নিজেদের জ্ঞানকে বিকশিত করতে থাকে। প্রায় ২০০০ বছর পর তারা সূর্যের শক্তির নিয়ন্ত্রণ নিজেদের হাতে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়। তবে তারা পরিবর্তন খুব কমই ঘটাত, শুধু মাত্র মানব সভ্যতার জন্যে যতটুকু প্রয়োজন ঠিক ততটুকু নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করত। তবে এর বিপরীতে চড়া দামও দিতে হত আলট্রনসেপিয়েন্সদের। উন্নত শরীর হবার কারণে তারা দীর্ঘ সময় বেঁচে তো থাকতে পারত সত্যি, কিন্তু রেডিয়েশনের প্রভাব হতে সম্পূর্ণ রূপে তারা মুক্ত ছিল না। আলট্রনসেপিয়েন্সের মধ্য হতে তারা যাকে এই কাজের জন্যে নির্বাচন করত তারা ঠিক ৩ বছরের মাথায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পরত। দীর্ঘ সময় সূর্যের রেডিয়েশনের প্রভাবে তারাও বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু বরণ করত। রেডিয়েশনের প্রভাব এত বেশি থাকত যে, এদের কারও দেহই পৃথিবীতে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হত না। সেখানেই তাদের একটা কক্ষে বক্সে করে সমাহিত করা হত।

মানব সমাজ কখনোই কোন বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তির অগ্রগতিকে সহজ ভাবে গ্রহণ করতে পারে নি, তা তারা যতই উন্নত সভ্যতার হোক না কেন। এবারের ঘটনাতেও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। এবারেও তারা আলট্রনসেপিয়েন্সদের এই নিয়ন্ত্রণ সহজ ভাবে মেনে নিতে পারেনি মানব সম্প্রদায়। বেশ বিক্ষোভ করল পোলার এরিয়া আর উষ্ণ শহরের মানুষ গুলি মিলে। কিন্তু প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয় হবার না কারণে তারা তাদের বিক্ষোভের কোন ভিত্তি তৈরি করতে পারেনি। বরং উত্তর উত্তর তাদের প্রাকৃতিক অবস্থা আরও সহায়ক হয়ে উঠছিল। সাইক্লোন, টাইফুন, সুনামির মত প্রাকৃতিক বিপর্যয় গুলি তারা দিনে দিনে প্রায় হারিয়েই ফেলেছে। বিজ্ঞান কাউন্সিল প্রথম দিকে খুব চাপের মুখে থাকলেও অবস্থার কারণে এইসব বিক্ষোভের বিপরীতে নিজেদের অবস্থান ধরে রাখতে সক্ষম হয় অবশেষে।

শিল্প সংস্কৃতির উন্নয়নের সাথে সাথে জুয়ার একটা ব্যাপার গড়ে উঠেছিল প্রতিটি সভ্যতাতেই। উষ্ণ শহর কিংবা পোলার এরিয়াতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। যখন সবার সংগ্রহেই জীবন যাপনের চেয়ে অতিরিক্ত ক্রেডিট জমা হতে থাকল তখনই জুয়ার আসর জমে উঠতে থাকল। আর জুয়া মানেই একটা সার্বক্ষণিক আসরের প্রয়োজন। বিনোদন মূলক বার তৈরি করে বছর কয়েক বাদেই সেখানে ধীরে ধীরে ক্যাসিনো গড়ে উঠতে থাকল। ক্যাসিনোর মালিক গুলি সর্বদাই তাদের প্রোফাইল ফ্রেশ রাখার কারণে নিরাপত্তা ব্যবস্থা তাদের বিরুদ্ধে কিছু করতে পারেনি। প্রযুক্তির সর্বোচ্চ ব্যবহারে ক্যাসিনো মালিকেরা ফুলে ফেঁপে উঠছিল দিনে দিনে। বিজ্ঞান কাউন্সিল এইসব ঝামেলায় নিজেদের জড়াতে চায় নি। যতক্ষণ বড় ধরণের কোন অপরাধ না ঘটছে ততক্ষণ তাদের ঘাঁটানো বাদ রাখল তারা। আর বড় ধরণের অপরাধ যাতে না হয় সেদিকে সূক্ষ্ম দৃষ্টি ছিল ক্যসিনো মালিকদের। যখনই কোন টেবিলে কেউ ক্রমান্বয়ে জিততে শুরু করত, তখনই তাদের বিশেষ ব্যবস্থা তাদের লাগাম টেনে ধরার কাজ করত।

ক্যাসিনো থেকে প্রায় সবাইকেই গোমড়া মুখে ফিরতে হয়। হাসি খুশি মুখে খুব কম মানুষই ক্যাসিনো হতে বের হতে পারে। তবে রয়েল ক্যাসিনোর কথা ছিল ভিন্ন। রয়েল ক্যাসিনোটা এমন ভাবে গড়ে তোলা হয়েছে যাতে সবাই একটা উইন-উইন পজিশনে থাকতে পারে। জুয়াড়ি খেলা হেরে গেলেও তৃপ্তি নিয়ে আবার ফিরে আসত রয়েল ক্যাসিনোতে। আর তাই আধিপত্যে রয়েল সকল ক্যাসিনোকে ছাড়িয়ে যায় খুব অল্পেই। এরা বেশ কয়েকটি শাখা তৈরি করলেও সেখানে খেলোয়াড় বা জুয়াড়ি নিত খুব গুনে বেছে। নির্দিষ্ট সংখ্যক জুয়াড়ি হয়ে গেলে সেদিনের মত ক্লাব ফুল ঘোষণা করা হত। একমাত্র যারা রয়েল ক্যাসিনোর দরজা পার করতে পারত না তারাই সেদিনের জন্যে মুখ কালো করে ফিরে যেত। কোন স্তরের মানুষ এই রয়েল ক্যাসিনোতে আসা হতে নিজের লোভ সংবরণ করতে পারেনি।

কারও যখন প্রয়োজনের অতিরিক্ত ইউনিটের পাহাড় গড়ে উঠে তখনই তারা সেটাকে ভিন্ন কোন খাতে ব্যবহার করতে শুরু করে। জুয়াড়িদের জুয়ারি এইসব জুয়ায় মেতে উঠে। তবে এর ফলাফল হাতে হাতে কেউ পায় না। বিশাল অঙ্কের ইনভেস্ট করে লম্বা সময়ের ধৈর্য ধরতে হয় তাদের। কেউ কেউ জুয়ার শুরুতেই হার মেনে যায়, আর কেউ সফলতার মুখ দেখার আগে হাল ছেড়ে দেয় না। দানের পর দান তারা লাগাতে থাকে এই অদৃশ্য জুয়ার টেবিলে।

মানব সমাজ হতে আলট্রনসেপিয়েন্সদের সবসময় একটা দূরত্বে রাখা হয়েছিল। হয়ত একত্রে থাকলেই সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়টা তখন ঘটে যেত। আর এ কারণেই মানব সভ্যতায় আলট্রনসেপিয়েন্সদের অবস্থান সবসময়ের জন্যে গোপন রাখা হত। একমাত্র এবং কেবলমাত্র বিজ্ঞান কাউন্সিলের কিছু সদস্য এই তথ্য জানত, আর জানত মিকি। যেহেতু সকল কর্মকাণ্ড মিকির নজরদারির মধ্যেই হত তাই কেউ এখন আর সেটা নিয়ে মাথা ঘামাত না। মিকির কাছে এই সব জুয়ার কোন তথ্যই গোপন থাকত না। সকল তথ্যই তার সংগ্রহে থাকত। সরাসরি এদের না ঘেঁটে এদের তথ্য গুলিতে সূক্ষ্ম পরিবর্তন ঘটিয়ে এদের পরিকল্পনাকে সবসময় বানচাল করে দিতে লাগল। কিন্তু ধীরে ধীরে পরিকল্পনাও শক্ত হাতে পরিচালনা করা হতে লাগল। বাইরে হতে কোন তথ্য বের করতে না পেরে বিজ্ঞান কাউন্সিলের ভেতর হতে খবর আদায়ে উঠে পড়ে লাগল।

বিজ্ঞান কাউন্সিলের প্রতিটি সদস্যকে ‘মহান মানব’ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। একমাত্র তারা আছে বলেই মানব সভ্যতার পুনঃ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হয়েছে। প্রতিটি সদস্যের মতামতের কারণে তারা এখন উন্নত একটা জাতীতে রূপ লাভ করতে সক্ষম হয়েছে। শুধু মাত্র তাদের হস্তক্ষেপের কারণেই মানব সভ্যতা পৃথিবীর হাত থেকে বিলীন হয়ে যায় নি। যে স্তরেরই হোক না কেন সবাই মন হতে কাউন্সিলের প্রতিটি সদস্যকে সম্মান করতেন। কিন্তু জুয়াড়ির মন কোন বাধা মানতে চায় না। একমাত্র তাদের উদ্দেশ্য আর উদ্দেশ্যের জন্যে কাজই তাদের এক অদ্ভুত নেশায় ডুবিয়ে রাখত। কিন্তু এই নেশাই একসময় বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসবে তা কবে কে ভেবেছিল। জুয়াড়ির জুয়ার ফাঁদে পা দিয়ে বসে এক কাউন্সিল সদস্য। পরোক্ষ ভাবে এক জুয়ার খেলাতে যোগ দিয়ে মাতাল হয়ে উঠে এই সদস্যটি। ধীরে খুব ফন্দি খাটিয়ে তার কাছ থেকেই আলট্রনসেপিয়েন্সদের তথ্য আদায় করে নেয় রয়েল ক্যাসিনোর নিয়োগ কৃত গুপ্তচর। বেশ উচ্চমূল্যে সে এই তথ্য বিক্রি করে রয়েল ক্যাসিনোর মালিক জনাথন আব্রাহামের কাছে।

জনাথন আব্রাহাম পূর্ণ মানব শিশু। কোন কারণে তাকে ক্লোন করে আলট্রনসেপিয়েন্স করা হতে বিরত থাকে। এমন যে শুধু জনাথনের ব্যাপারেই হয়েছে তা নয়। ক্লোন শিশু খুব নির্দিষ্ট পরিমাণে তৈরি করা হত, যাতে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বজায় থাকে। আর ডি. এন. এ. হতে তথ্য উপাত্ত নিয়েই কোন ভ্রূণকে ক্লোন করা হবে তা নির্ধারণ করা হত। কিছু ভ্রূণ কখনোই মাতৃগর্ভ হতে বাইরে আসত না। এরা প্রাকৃতিক উপায়েই বেড়ে উঠত। স্বাভাবিক নিয়মেই জন্ম হত তাদের। সকল সুবিধাই তাদের জন্যে ছিল উন্মুক্ত। জনাথনও তাদের একজন। বাকি শিশুদের তুলনায় সে খুব দ্রুত বেড়ে উঠে। সবাই যখন কলেজ পাশের চিন্তায় মগ্ন তখন সে বিজ্ঞান কাউন্সিল দ্বারা পরিচালিত ইউনিভার্সিটিতে পড়ার জন্যে আবেদন পত্র জমা দেয়। মেধাস্বত্তের কারণে বিজ্ঞান কাউন্সিল পরিচালিত সেই ইউনিভার্সিটিতে তার প্রবেশাধিকারও পেয়ে যায় সে। ডক্টরেট সম্পন্ন করে ফিরে আসে আপন শহরে। ফ্যামিলি বিজনেস বাদ দিয়ে নিজের চেষ্টাতেই বার খুলে বসে। আর তারপর তাকে পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। খুব দ্রুতই সকলের মধ্যে নিজের শক্ত অবস্থান গড়ে তোলে।

প্রতিদ্বন্দ্বী যে কেউ আসেনি কখনো তার রাস্তায় এমন নয়। কিন্তু প্রতিটি প্রতিদ্বন্দ্বীকে খুব চালাকির সাথে নিজের দলে ভিড়িয়ে নিয়েছে। নিজের অধীনস্থ হিসেবে তাদেরও অবস্থান গড়ে দিয়েছে। তাই এই বাজারে তার কোন শত্রু নেই বললেই চলে। যারা শত্রুতার মনোভাব নিয়ে আসে তারাই রক্ষা করতে উদ্যত হয় অবশেষে। প্রতি শহরের সকল তথ্য হাতের নাগালে এভাবেই চলে আসে জনাথনের। অন্ধকারের এই সাম্রাজ্যে তাকে বাদশাহ হিসেবে মেনে নেয় সকলে।

ধীরে ধীরে বেশ কিছু প্রকৌশলীকে নিজের সাম্রাজ্যে নিয়ে আসে। সবাইকে ধোয়ার মধ্যে রেখে খুব সন্তর্পণে নিজের প্লান অনুসারে এবারে কাজে হাত দেয় জনাথন। বাইরের নেটওয়ার্ক থেকে এবারের প্রজেক্ট সম্পূর্ণ আলাদা রাখে। প্রতিটি তথ্যর এত নিরাপত্তা দিয়েছে যে খোদ নিরাপত্তা বিভাগেই তথ্যের এত নিরাপত্তা তারা দিতে সক্ষম নয়। মিকি’র ধরা ছোঁয়ার বাইরে রেখে এবারের প্রজেক্টের কাজ করতে থাকে জনাথন। মাস খানিক বাদে বাদেই প্রকৌশলীদের টাস্ক পরিবর্তন করে দেয়া হত। শুধু টাস্ক পরিবর্তনই নয়, সময়ের সাথে তাদের অবস্থানের পরিবর্তনও করত। বিশাল কয়েকটি জেটিতে খুবই নিরাপত্তার সাথে তৈরি করে নেয় কয়েকটি সাবমেরিন। স্যাটেলাইট হতে এমন ভাবে এইসব জেটি গুলিকে নিরাপদ করা হয় যে স্যাটেলাইট নিশ্চিত তথ্য জেনেও তাদের অবস্থান নির্ধারণ করতে ব্যর্থ হয়।

মিকিও বুঝতে পারে তার ধারণার বাইরে কোন একটা কাজ করে চলেছে রয়েল ক্যাসিনোর মালিক জনাথন আব্রাহাম। কিন্তু প্রতিটি ইউনিটের স্বচ্ছ হিসেব থাকার কারণে তাকে ধরার কোন অবস্থারই সৃষ্টি করতে পারে না। তার প্রতিটি যোগাযোগ মনিটর করা হয়, তবুও নির্বিঘ্নে জনাথনের কাজ এগিয়ে যেতে থাকে। যারা জনাথনের হয়ে কাজ করে তারা এতটাই বিশ্বস্ত যে বেশ কয়েকবার নিরাপত্তা বিভাগ মিথ্যে ঘটনা সাজিয়ে তাদের তুলে নেবার পরও জনাথনের বিপরীতে কোন তথ্য তাদের হতে আদায় করতে পারেনি। প্রতিবারই বিফল হয়েছে তারা। জনাথনও বসে থাকার পাত্র ছিল না, প্রতিটা সদস্য তুলে নেবার সাথে সাথেই শহরের সেরা ল’ইয়ার পাঠিয়ে দিত নিরাপত্তা বিভাগে। জনাথনের পূর্বেই প্রতি সদস্যদের সকল কাগজপত্র তৈরি করে রাখার নির্দেশ থাকত ল’ইয়ারদের প্রতি। তারাও সকল কাগজ পূর্ব থেকেই তৈরি রাখত। জনাথনের কোন লোকই ৭ দিনের বেশি নিরাপত্তা বিভাগের বিল্ডিং এ অবস্থান করেনি। ৭ দিনের মাথায় যেভাবেই হোক তাকে বের করে নিয়ে আসতে সক্ষম হয়েছে ল’ইয়ারেরা।

বের করে আনার পর তাদের কোন প্রশ্ন করা হত না। পদমর্যাদায় কোন হেরফেরও হত না। যে যেখানে ছিল সেখানেই তার কাজ করে যেত। বলা চলে তারপর আরও দৃঢ়ভাবে জনাথনের হয়ে কাজ করত তারা। অবস্থার পরিবর্তন করতে না পেরে শেষ পর্যন্ত এইভাবে হাল ছেড়ে দেয় নিরাপত্তা ব্যবস্থার লোকজন। নিজেরাই জনাথনের দলে ভেড়ার চেষ্টা করতে থাকে এরপর হতে। কিন্তু জনাথনের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি এড়িয়ে সে দিকেও তেমন সফলতা দেখতে পারেনি তারা। যখনই তাদের কেউ কাজের জন্যে জনাথনের কাছে এসেছে জনাথন সাথে সাথেই তাদের কাজ দিয়েছে। কিন্তু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে তাদের নিয়ে গেছে আপন ঘাটি হতে বেশ অনেক দূরে। এত দূরে যে সেখান থেকে নিরাপত্তা বিভাগের সাথে নিয়মিত যোগাযোগ রাখাই চরদের জন্যে চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াত। নিরাপত্তা বিভাগ হাত গুটিয়ে নেবার আগে শেষ চেষ্টা হিসেবে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের দিকে নজর দেয়। খুব চালাকি করে সেখান থেকে ‘রুশান’ নামের একটা ছেলেকে বের করে নিয়ে আসে। প্রচুর নিরাপদ যোগাযোগ ব্যবস্থা ব্যবহার করে ছেলেটির সাথে ধীরে ধীরে যোগাযোগ গড়ে তোলে তারা।

রুশান কখনোই জানতে পারেনি কার সাথে সে যোগাযোগ করছে। তবে ধারণা করত বিজ্ঞান কাউন্সিল হতে এদের অনুমতি দেয়া আছে। ডার্ক ওয়েবে প্রতিদিন নতুন নতুন চ্যাটরূম তৈরি করে সেখানে যোগাযোগ হত তাদের। মূল ব্যাপারটা না জানিয়ে তাকে বোঝানো হয় জনাথনের ঐ স্পেশাল গ্রুপে তাকে প্রবেশ করতে হবে। অবস্থান গড়তে হবে খুব ভালো একটা পজিশনের। তার উপর যেন খোদ জনাথন বিশ্বাস রাখতে পারে এমন পরিস্থিতি তার নিজের মেধায় তাকে তৈরি করতে হবে। ব্যাপার গুলি আজব হলেও রুশান বেশ রোমাঞ্চ অনুভব করল মনে মনে। শেষ পর্যন্ত যখন জানতে চাওয়া হল সে এই কাজের জন্যে রাজী কি না তখন রুশানের আর পিছ পা হবার সুযোগ নেই। ডার্ক ওয়েবে তার অবস্থান মোটামুটি জেনে বুঝেই যে তারা যোগাযোগ করছে সে ব্যাপারটা একদম নিশ্চিত। এলাইস বদলালেও তারা যোগাযোগ করা থেকে পিছ পা হয়নি। কোন না কোন ভাবে তারা ঠিকই তাকে খুঁজে বের করেছে। এই অবস্থায় ‘না’ বলাটাও বোকামি হবে। কারণ তাতে পরবর্তীতে তার প্রতিটি কাজের নজরদারী করবে তারা। আর তার কাজও যে বেশ পরিষ্কার তা নয়। নিরাপত্তা বিভাগ হলে ঠিকই তাদের নাক সেখানে তারা গলাবে সেখানে। তাই বাধ্য হয়েই রাজী হতে হল তাকে।

পরের সেমিস্টারেই গ্রাজুয়েশন বাগে চলে এল রুশানের। সহজ স্বাভাবিক ভঙ্গিতেই একটা জবের জন্যে এপ্লাই করল জনাথনের একটা ক্লাবে। রেকর্ড পরিষ্কার বলে জনাথনও নিয়োগ দিল ছেলেটিকে। খুব সাবধানে রুশান তার মেধার প্রকাশ ঘটাতে লাগল। টেবিলের চমক দেখানোর সাথে সাথে নিজের মেধার চমকও দেখাতে শুরু করল। জনাথনের নজরে আসতে খুব বেশিদিন খাটতে হল না তাকে। ক’দিন বাদেই রুশানের ডাক পড়ল জনাথনের চেম্বারে। খুব সময় নিয়ে জনাথন তার রিপোর্ট গুলি দেখতে লাগল তাকে সামনে বসিয়েই। তারপর তার ডার্ক ওয়েবের এলাইস নাম ধরে ডাকল। জানতে চাইল যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও কেন সে এখানে পড়ে আছে। জবাবে রুশান বলল, যোগ্যতা দেখাবার অনেক জায়গা থাকতে পারে কিন্তু সবাই জানে কোথায় সেটা খাটালে নিশ্চিত মুনাফা হিসেবে ফেরত আসবে। বাঁকা হলেও জনাথনের মনে ধরল কথাটা। সে তাকে পরবর্তী দিন আবার দেখা করতে বলল।

রুশান জানত তাকে জনাথন দলে ভেড়াবেই। কিন্তু এত দ্রুত সেটা ধারণা করতে পারেনি। সপ্তা খানিক বাদেই এক জেটিতে তাকে নিয়ে আসা হল। কোন পথে কোথায় এই জেটি সেটি পুরোটাই থাকল তার জ্ঞানের বাইরে, কারণ পুরো পথ তাকে অজ্ঞান করিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। কোন রকম রিস্ক নেয়নি জনাথনের লোকজন। আশপাশের শব্দে যাতে এলাকা বুঝতে না পারে তাই পূর্ণ রূপে জ্ঞান ছাড়িয়ে তারপর তাকে নিয়ে এসেছে এই জেটিতে। জেটিতে চারিদিকেই কর্মমূখর পরিবেশ। এরা প্রায় সবাই যার যার অবস্থানে সেরাদের সেরা। কিন্তু সেই সেরা কাজটাই দিতে এসেছে জনাথনের কাছে। আর কাজের মূল্য জনাথনের চেয়ে কেউ বেশি বোঝে না। তাই ন্যায্য পারিশ্রমিকই দেয়া হচ্ছে প্রতিটি সদস্যকে।

রুশানকে যখন নিয়ে আসা হল তখন প্রজেক্টের প্রায় সকল কাজ গুটিয়ে এসেছে। এখন চলছে টেস্টিং সেশন। সর্বোচ্চ মেধা শক্তিকে কাজে লাগিয়ে জনাথন বেশ কয়েকটি সাবমেরিন তৈরি করেছে এই গোপন জেটি গুলিতে। আপাতত কোন প্রযুক্তি এই সাবমেরিন গুলির অবস্থান নিশ্চিত করতে সক্ষম নয়। শুধুমাত্র এবং কেবল মাত্র জেটির কম্পিউটার সিস্টেমই এদের অবস্থান জানতে পারবে। আবার এক জেটির কম্পিউটার আরেক জেটির সাবমেরিনকে ধরতে সক্ষম নয়। প্রতিটা সিস্টেমকেই স্বতন্ত্র নিরাপত্তা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। তাই নিরাপত্তা বিভাগের কেউ যদি একটা জেটির সন্ধান পেয়েও যায় তবুও বাকি জেটি গুলির কোন তথ্য কোথাও হতে বের করে নিতে পারবে না।

রুশানকে তার কাজ বুঝিয়ে দেয়া হল। সাবমেরিনের ভেতরকার নিরাপত্তা সেকশনে তাকে একটা পোষ্ট দেয়া হল। এত কিছুর ভেতরে রুশানও জানতে পারেনি বিজ্ঞান কাউন্সিল তার উপর নজরদারির জন্যে তারই মত আরেকজনকে নিয়োগ দিয়ে রেখেছে। আর সে নিয়মিত রুশানের রিপোর্ট গোপন চ্যানেলের মাধ্যমে নিরাপত্তা বিভাগকে দিয়ে আসছে।

তিন হপ্তা বাদে প্রথমবারের মত জেটি হতে সাবমেরিন গুলিকে সমুদ্রে ছাড়া হয়। জেটির জল সীমানার প্রায় ১০,০০০ কিলোমিটার তারা খুব নিরাপদেই তাদের ভ্রমণ দিয়ে আবার জেটিতে ফিরে আসে। নিরাপত্তা বিভাগের প্রতিটা চ্যানেলে বাগ বসিয়ে নিশ্চিত হয় তাদের এই টেস্ট ড্রাইভ সম্পর্কে কোন তথ্যই এখনো নিরাপত্তা বিভাগের কাছে পৌঁছেনি। ঘটনার ৫ম দিনের মাথায় প্রথম বারের মত নিরাপত্তা বিভাগে একটু চঞ্চলতা দেখা যায়। জনাথনের প্রতিটি বার আর ক্যাসিনোতে তারা কোয়ারি বসায়। জনাথনও নীরবে তাদের প্রতিটি কাজ চালিয়ে নেবার নির্দেশনা দেয়। নিরাপত্তা বিভাগ জনাথনের এমন উদাসী ভাব দেখে আরও চটে যায়। বিগত বছরের সকল হিসেবের পাই পাই তারা ঘাটিয়ে দেখতে থাকে। টানা ১৫ দিন ক্যাসিনো আর বার বন্ধ রেখে যখন কোন তথ্যই বের করতে পারল না তখনই কেবল জনাথনের কাছে ‘সরি’ বলে ‘ক্লিন’ সার্টিফিকেট দিয়ে বের হয়ে আসতে বাধ্য হয়।

জনাথন জানতই এমন কিছু হবে। প্রতিবার রেট বসানোর পরই তার কাছে মাথা নিচু করে বের হয়ে যেতে হয়েছে এই টিকটিকি গুলিকে। প্রতিটা ইউনিট এত পরিষ্কার ভাবে লেনদেন করে জনাথন যে কোন পথে যে তার ইউনিট তার বিশাল সাম্রাজ্যের সৈন্যদের নিকট পৌঁছে তা কেউ বের করতে পারে না। তবে জনাথন এবারে উদ্বিগ্ন হয়। কেউ তো আছে যে মিশন সম্পর্কে নিরাপত্তা বিভাগকে খবর দিচ্ছে। নয়ত মিশন লঞ্চের ঠিক ক’দিন আগেই এভাবে তারা রেট দেয় না। কিছু একটা গোলমাল এর মধ্যে নিশ্চিত রয়ে গেছে। আর গোলমালটা কোথায় হয়েছে তা বের করতেও সময় নেয় নি। কালপিটকে ঠিক পরদিনই তার চেম্বারে নিয়ে আসা হয়। যখন বুঝতে পারল সে ধরা পরে গেছে তখনই খুব সাবধানে রুশানের রুমের বাইরে দাড়িয়ে তাকে ডেকে তোলে এই অজ্ঞাত লোকটি। তারপর দরজা না খোলার অনুরোধ করেই তার কথা গুলি খুব ধীরে এবং দ্রুত জানায় রুশানকে। রুশান প্রথমে তার উপর নজরদারির ঘটনায় রেগে গেলেও শেষে অবস্থার গুরুত্ব বুঝতে পারে। পরবর্তীতে তাকে কি করতে হবে তা বলেই নিঃশব্দে সেখান থেকে চলে আসে লোকটি।

জনাথন জানে সহজে লোকটি মুখ খুলবে না। তাই সেদিকে না গিয়ে সরাসরি কতটুকু ক্ষতি সে করেছে তা বের করার নির্দেশ দিল তার লোকজনকে। ৪ দিন পর যখন তার লোকেরা রিপোর্ট করল তখন সন্তুষ্ট চিত্তেই জনাথন লোকটির দিকে তাকাল। এই চারদিন লোকটি জনাথনের নজরের বাইরে যায়নি। জনাথনও এই ৪ দিন এই রুমটি ত্যাগ করেনি। তারপর আবার নির্দেশনা দিল একে জেটিতে ফিরিয়ে নিয়ে সেলে বন্দী করে রাখতে। যেহেতু নিরাপত্তা বিভাগ আগে থেকে এসে মাথা নত করবে না, তাই এর সম্বন্ধেও কিছু জানতে চাইবে না।

৩ দিন পর সাবমেরিন গুলি রিফুয়েলিং করে বিচিত্র কিছু কোর্স ধরে এগিয়ে যাবার নির্দেশ দিল। সরাসরি রেডিও সাইলেন্স রাখার নির্দেশ প্রতিটা সদস্যকে লিখিত দেয়া হল। খুব বড় ধরণের বিপদে না পড়লে এরা কেউই রেডিও ফায়ার-আপ করতে পারবে না। যদিও তাদের রেডিও সিগনাল গুলি যথেষ্ট নিরাপদ, তবুও জনাথন কোন চান্স নিল না। আলাদা আলাদা কোর্সে সব গুলি সাবমেরিনকে সমুদ্রে পাঠিয়ে দিল। প্রথম সাতদিন নির্দিষ্ট গতিতে একটা কোর্স ধরে এগিয়ে চলল রুশানদের সাবমেরিন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা এত জোরদার যে রুশান খুব গোপনে আলাদা আরেকটা চ্যানেল খুলতে ব্যর্থ হল। সিগনাল জ্যামিং প্রযুক্তি কোন সিগনালকে এক মিটার এগুতে দেয় না। তার আগেই ধরে ফেলে। কয়েকবার ট্রাই করে রুশান বাদ দিল। বেশি চেষ্টা করলে হয়ত তাকেও সরিয়ে ফেলা হবে ঐ অজ্ঞাত লোকটির মত।

মিকি সমুদ্রে একটা সূক্ষ্ম আলোড়ন লক্ষ করল দু দিন ধরে। মোট ৮টি স্থানে এমন আলোড়ন তৈরি হচ্ছে। কিন্তু কিসের মাধ্যমে এই আলোড়ন তৈরি হচ্ছে তার সম্বন্ধে কোন তথ্যই দিতে পারছে না তার সিস্টেম। সমুদ্রে টহল রত সকল নৌযান এবং সাবমেরিনকে জানিয়ে দেয়া হল অযাচিত কোন মুভমেন্ট লক্ষ করা মাত্রই তাকে গুড়িয়ে দেবার। সবাই তক্কে তক্কে রইল এই ক’টাদিন। অবশেষে ৩টি সাবমেরিনকে তারা ধরতে সক্ষম হল। কিন্তু কোনটাই অক্ষত অবস্থায় বাগে আনতে পারল না। যখনই বুঝেছে তাদের নিশ্চিত ধরে ফেলা হবে তখনই সেল্ফ ডিসট্রাকশন সিস্টেম চালু হয়ে গেছে। নিয়তি সকল সদস্য সহ পুরো সাবমেরিনকে গুড়ো করে দিয়েছে। অবশ্য সবাই যার যার নিয়তি মিশনের শুরুতেই মেনে নিয়েছে।

জনাথনের এতেও কোন বিকার দেখতে পেলো না নিরাপত্তা বিভাগ। বেশ কয়েকবার তাকে ভিডিও কনফারেন্স করে হুমকি দেয়া হয়েছে যে এই সব উল্টো পাল্টা কাজের সাথে কোন ক্লু যদি তার বিরুদ্ধে পাওয়া যায়, তাহলে শুধুমাত্র তাকে ধরেই শূলে চড়ানো হবে। এই কথার পরও জনাথন নির্বিকারই থাকে। উল্টো তাদের বলল, নিরাপত্তা বিভাগ যদি কোন ত্রুটি খুঁজে পায় তাহলে তারা যে শাস্তিই দেবেন তা সে মাথা পেতে নিবে। এও বলল, তার বার আর ক্যাসিনো নিরাপত্তা বিভাগের প্রতিটি লোকের জন্যে সবসময় খোলা।

নিরাপত্তা বিভাগের হর্তাকর্তারা নিজের চুল টেনে ধরে বসে আসে। ৩টা সাবমেরিন হতে আসার পরও কোন তথ্য সেখান থেকে বের করে আনতে পারেনি। যেন মাটি ফুড়ে বের হয়ে এসেছে এগুলি। যাদের ডি. এন. এ. এর ভেতর থেকে উদ্ধার করতে পেরেছে তাদের সবাই বিভিন্ন কাজে বিভিন্ন কোম্পানিতে নিযুক্ত ছিল। তারপর তারা ভ্যাকেশনে গিয়েছিল। কিভাবে কোন যাদু বলে সবাই এমন উদ্ভট দর্শন সাবমেরিনে এসেছে তার কোন ক্লু’ই তারা বের করতে পারল না। প্রতিটা রেকর্ড ক্লিন। কাউকে ধরে বলার মত কিছুই খুঁজে পায়নি তারা।

১০ দিন পর প্রথম বারের মত রুশানদের সাবমেরিন গতির পরিবর্তন করে। যেন কিছুটা তাড়াহুড়া করেই কোথাও পৌছাতে চাইছে এখন সাবমেরিনটা। অবশ্য সবকিছুই নির্দেশনা মোতাবেক এগিয়ে যাচ্ছে। মিকির নজরও সূক্ষ্ম এই পরিবর্তন হতে এরিয়ে গেল না। কিন্তু এইবার সে আর কাউকে কোন নির্দেশনা দিল না। নিজেই কিছু নিরাপত্তা রোবট পাঠিয়ে দিল আলট্রনসেপিয়েন্সদের মহাদেশে। নিরাপত্তা বিভাগের জন্যে তৈরি করা হলেও এই ৩০ টি রোবট অন্য সকল রোবট হতে ভিন্ন ক্ষমতা সম্পন্ন। এদের কপোট্রন সরাসরি মিকি’র হতে নির্দেশ গ্রহণ করে। আর ধ্বংস করার জন্যে এদের একটাই তার মত ১০০০ রোবট এক নিমিষে শেষ করতে পারে। ফিল্ড টেস্ট করার পর নিরাপত্তা বিভাগের ব্যাজ লাগিয়ে খুব সাবধানে মিকি এই রোবট গুলিকে আলাদা করেছে। কাউন্সিলের প্রতিটি মেম্বারের জন্যে তার সংগ্রহে ১টি করে রোবট নিয়োজিত। বিন্দু মাত্র বিপদ বোঝা মাত্রই রোবট গুলি নিজে থেকে কাউন্সিল মেম্বারকে ঘিরে নিরাপত্তা বলয় তৈরি করবে। তারপর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসার আগ পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সকল ব্যবস্থাই সে গ্রহণ করতে সক্ষম।

২১ দিন পর রুশানদের সাবমেরিন একটা নির্দিষ্ট অবস্থানে এসে থামল। ২ দিন সেখানেই তারা অবস্থান করল। এরপর ৩য় দিনের মাথায় ৫টি আলাদা আলাদা স্কাউট বোট পানির নিচে দিয়েই ৩ জন করে সদস্যকে নিয়ে বের হল। প্রথম বার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে একটা টহল দিল তারা। তারপর সকল নিরাপত্তা নিশ্চিত জেনেই এগুতে থাকল আপন লক্ষ্যের দিকে। এভাবে ৮ ঘণ্টার জার্নি শেষে তাদের পা ঠেকল বালিতে। ধীরে ধীরে খুব সন্তর্পণে তারা মুক্ত একটা জায়গায় বের হয়ে আসল। রুশানও ছিল সেই অভিযাত্রীদের সঙ্গে। তাদের সুট এমন ভাবে তৈরি যে বডি টেম্পারেচারও তাদের অবস্থান কাউকে জানতে দিবে না। পাড়ে উঠেই তারা বুঝতে পারল এখানকার নিরাপত্তা ব্যবস্থা তাদের স্বাগতম জানানোর জন্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে অপেক্ষা করছে। এরপর টানা ১২ ঘণ্টা তারা পায়ে হেটে একটানা এগিয়ে গেল। ১৫ জন সদস্যের কেউই তাদের ভবিষ্যৎ নিয়ে একবিন্দু পর্যন্ত ধারণা করতে পারেনি সেই মুহূর্তে।

বিকেলের দিকে তারা একটা বেস ক্যাম্পের খুব কাছাকাছি চলে আসল। বেস ক্যাম্প হলেও বাইরে থেকে তারের উঁচু প্রাচীর দেয়া ছিল না তাতে। তার বদলে কোমর পর্যন্ত এক ধরণের তার টানা তার ছিল সেখানে। তবে সন্ধ্যা নামার আগে দলনেতা কোন রিস্ক নিতে চাইল না। সবাইকে ছড়িয়ে যাবার নির্দেশনা দিয়ে বিশ্রাম নিতে বলল। এর মাঝে অবশ্য রুশান একটি কাজ সকলের অগোচরে করল। বেশ পুরাতন একটা প্রযুক্তি ব্যবহার করে নিরাপত্তা বিভাগে তাদের অবস্থান জানিয়ে রাখল। কোন দিকে কতটুকু এগিয়েছে সেটারও একটা ধারণা দিল। বর্তমানে যে অচেনা একটা বেস ক্যাম্পের সামনে অপেক্ষা করছে সে খবরও পৌঁছে দিল বিরতিতে। নিরাপত্তা বিভাগ যখন এই মেসেজের অর্থ উদ্ধার করার জন্যে ছোটাছুটি করছিল মিকি ততক্ষণে পুরো মেসেজ ডিকোড করে নিল। তারপর আলট্রনসেপিয়েন্সদের প্রতিটি বেস ক্যাম্পে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার নির্দেশনা পৌঁছে দিল।

আলট্রনসেপিয়েন্সদের নিজেদের মাঝে অবিশ্বাস করার মত কিছুই ছিল না কোন কালে। তাই নিরাপত্তা নিয়ে তারা কখনোই তেমন মাথা ঘামায়নি। যখন সকলেই নিয়মের মধ্যে চলে সেখানে নিরাপত্তা নিয়ে এত ভেবেই বা কি হবে! তাই তারা মোটামুটি এক ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা তৈরি করে আপন মনে নিজেদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল। আলট্রনসেপিয়েন্সদের আধুনিক রোবট ভাবলেও খুব একটা ভুল হবে না। তবে রোবট আর তাদের মাঝে পার্থক্য হল, রোবট মুক্ত চিন্তার অধিকারী হলেও তার মধ্যে অনুসন্ধানী কিছু আপনা আপনি সৃষ্টি হয় না। কিন্তু আলট্রনসেপিয়েন্সদের মস্তিষ্কের মৌলিক গঠন মানুষের মত হওয়ায় প্রতিনিয়ত বিভিন্ন আইডিয়া তাদের মস্তিষ্কে জন্ম নেয়। আর কোন একটা আইডিয়া কেউ পেলে সেটা বাস্তবায়ন করার আগ পর্যন্ত তারা শান্ত হয় না। মিকির নির্দেশনা পেয়ে মধ্যম দূরত্বের লেজার সিস্টেম গান নিয়ে দুটি করে টহল জিপ ক্যাম্পের চারিপাশে টহল দিতে শুরু করল।

সন্ধ্যা নাগাদ এই পরিবর্তন দেখে ছোট দলটির দলনেতার বুঝতে বাকি রইল না যে তাদের আগমনের খবর ইতোমধ্যে সকলের জানা হয়ে গেছে। শুধু মাত্র তাদের স্পেশাল সুটের কারণে তার অবস্থান নিশ্চিত করে জানতে পারছে না। সন্ধ্যার পর সকলেই আবার একত্রে মিলিত হল। বেশ অনেক সময় ধরে টহল জিপ দুটির ফিরে ফিরে আসার সময়ের পার্থক্য বের করল তারা। প্রতি ৫ মিনিট পর পর জিপ গুলি ফিরে আসছে। তাদেরকে এই পাঁচ মিনিটের মধ্যেই ক্যাম্পে ঢুকতে হবে এবং নির্দেশিত কাজটি করতে হবে। এরপর ঘণ্টা খানিক নানা হিসেব নিকেশের পর দলনেতা সবাইকে নিয়ে এগিয়ে চলল। তবে সবাই দৌড়ে না গিয়ে হামাগুড়ি দিয়ে এগুতে লাগল। ভাগ্য ভাল যে এরা স্পট-লাইট সেট করে তা দিয়ে কাউকে খুঁজে ফিরছে না। অন্ধকারে নিজেদের ভালোই কভার করার সুযোগ পাচ্ছে তারা। বেস ক্যাম্পের কাছাকাছি এসে ঢিল ছুড়ে যখন নিশ্চিত হল কোথাও কোন বৈদ্যুতিক তার ছড়িয়ে রাখেনি তখন শেষ জিপটা ঘোরার সাথে সাথেই সবাইকে নিয়ে ছুটল দলনেতা।

এবারে এক রকম দৌড়েই বেস ক্যাম্পে প্রবেশ করল তারা। প্রবেশ করেও কোন থামার লক্ষণ দেখা গেলো না। সমান তালে দলনেতার পিছু পিছু সবাই এগিয়ে চলল। সকলের সাথে ২টি করে রিমোট কন্ট্রল্‌ড এবং টাইমার ব্যবহৃত গ্রেড থ্রি টাইপ C-4 বোমা রয়েছে। দলনেতা সবাইকে নিয়ে একটা বড় লঞ্চার বেসে পৌঁছে গেল। আর ঠিক সে মুহূর্তেই পেছন থেকে আতর্কিক হামলা শুরু হল। কিছু বোঝার আগেই ৩ জন লুটিয়ে পড়ল। দলনেতা চিৎকার করে সবাইকে সুটের প্রোটেকশন মোড চালু করতে বলল। প্রোটেকশন মোড চালু করলে মূলত আর লুকিয়ে থাকার সিস্টেম কাজ করে না। এখন অবশ্য তার প্রয়োজনও ফুরিয়েছে। কারণ তাদের অবস্থান নিশ্চিত জেনেই একটা জিপ ছুটে আসছে। সকলের পাশ দিয়েই লেজারের ফুলঝুরি ছুটে যেতে লাগল। কিন্তু তাদের কাউকেই আর লেজার স্পর্শ করল না। সবাইকে দ্রুত হাতে লঞ্চার বেসে তাদের বোমা গুলি লাগাবার নির্দেশ দিল।

সকলেই তার বোমা গুলি দূরত্ব বুঝে লঞ্চার বেসে লাগিয়ে দিয়েছিল, শুধু মাত্র রুশান বাদে। সে এক কোনে বসে নিরাপত্তা বিভাগে যোগাযোগ করার জোড় প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছিল। মনে মনে রুশান আশা করছিল যে আলট্রনসেপিয়েন্সেরা এসে তাদের সবাইকে ধরে নিবে আর বোমা গুলি নিষ্ক্রিয় করে দিবে। কিন্তু ঘটনা তেমন ঘটল না। আলট্রনসেপিয়েন্স গুলি নির্দিষ্ট একটা দূরত্বে দাড়িয়ে রইল। লেজার গান বন্ধ করে এবার সত্যিকারের বুলেট চালিত গান-শিপ হতে গুলি ছুড়তে লাগল। প্রায় সকলেই সেই গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে গেল। গুলি করা থামাতেই রুশান বুঝল তাকে কি করতে হবে। বিপদ বুঝেও সে ছুট লাগাল। ছুটে ছুটে সব গুলি বোমা প্লান্ট করা স্থান হতে খুলে প্যান্টের পকেটে ঢুকাতে লাগল। একটা করে ছুটিয়েই আবার দৌড় লাগাচ্ছে অন্যটা ছোটানোর জন্যে। হুস জ্ঞান হারিয়েই কাজটা করে যাচ্ছিল সে। কিন্তু যখন হুশ হল ততক্ষণে অনেক দেরি হয়ে গেছে। এবারে বেস হতে দৌড়ে বেশ অনেকটা দূরত্বে চলে আসল সে, আর তখনই বিস্ফোরণটা ঘটল। পকেটের C-4 গুলি একটার পর আরেকটা ফেটে চলল। পায়ের নিচ হতে রুশানের দেহটি আলাদা হয়ে গেল। ছিটকে পড়ল এক কোনে। তারপর আর কিছুই মনে নেই তার।

জিপে বসা আলট্রনসেপিয়েন্স গুলি বিস্ময় নিয়ে দেখতে লাগল আক্রমণকারীদের একজন প্রাণপণে ছুটে ছুটে বোমা গুলি খুলে নিচ্ছে। আর তার কিছুক্ষণ পর উত্তর-পশ্চিম কোন ধরে ছুটে যেতে লাগল। তবে বেশিদূর এগুতে পারল না, তার আগেই বোমা গুলি ফুটতে শুরু করল। যতক্ষণে বুঝল এই ছেলেটি তাদের উপকার করার জন্যেই কাজ করেছে তখন জিপ হতে দু’জন আলট্রনসেপিয়েন্স ছুটে বের হল। দৌড়ে ছেলেটার ছিন্ন দেহ তুলে আনল জিপে। তারপর সরাসরি তাকে নিয়ে মেডিকহোমে ছুটল। এর মাঝে অবশ্য বাকি সকল বেসে খবর পৌঁছে দিল যাতে তারা সিগনাল জ্যাম প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই হামলাকে ঠেকিয়ে দিতে পারে। তারপর আর কোন বেসেই বোমা ফেটে উঠেনি। সবাইকে ধরে নিয়ে সেলে বন্দি করা হল।

মেডিকহোম সেন্টার সরাসরি তাকে রিক্রিয়েশন বিভাগে ট্রান্সফার করে দিল। প্রযুক্তির আধুনিক মেডিকেশন সিস্টেম সেল ক্রিয়েশন সিস্টেম ইউনিটে ধীরে ধীরে রুশানের মৃত কোষ গুলিকে ছাড়িয়ে নিয়ে নতুন কোষ তৈরি করতে থাকে। যেহেতু সিস্টেমটি আলট্রনসেপিয়েন্সদের জন্যে তৈরি তাই রুশানের নতুন কোষ গুলিও আলট্রনসেপিয়েন্সদের মত হতে লাগল। মানুষের কোষ হতে তৈরি হলেও আলট্রনসেপিয়েন্সদের কোষ গুলি ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন রকমের। গঠনগত দিক হতে সেগুলি মানব সেল হতে কিছুটা লম্বাটে ধরণের। ৬ ঘণ্টা পর রুশানের নতুন দেহ তৈরির কাজ সম্পন্ন হল। কিন্তু তখনও তার জ্ঞান ফেরেনি। মিকির সাথে যোগাযোগ করে তাকে বিজ্ঞান কাউন্সিলে ফিরিয়ে নেবার সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করল আনট্রনসেপিয়েন্সেরা। এর ঘণ্টা ২ বাদে একটা আধুনিক মেডিক টিম সহ চপার এসে থামল আলট্রনসেপিয়েন্সদের মেডিকহোমে।

পরদিন ভোরে বিজ্ঞান কাউন্সিলের বিশেষ কক্ষে রুশানের জ্ঞান ফিরে আসল। এর মাঝে কত কিছুর পরিবর্তন হয়ে গেছে তার কিছুই সে জানতে পারল না সে ঐ মুহূর্তে। বিজ্ঞান কাউন্সিলের সভাপতি মহামান্য লুকাস তার জ্ঞান ফিরে আসার জন্যে অপেক্ষা করছিল। জ্ঞান ফিরে পাবার পর সে কোথায় আছে তা ধারণা করার একটা চেষ্টা করল। মহামান্য লুকাস তার মনের কথাটাই যেন বুঝতে পেরে বললেন, তুমি নিরাপদেই আছো। তারপর যখন গতরাতের বিস্ফোরণের কথা মনে পড়ল সাথে সাথে নিজেকে হাতড়ে অনুভব করবার চেষ্টা করল রুশান। প্রায় সবই ঠিক আছে। তবুও কোথাও একটা গোলমাল আছে। রুশান জানতে চাইল, এটা কোন মাইন্ড ইমুলেশন প্রজেক্টর কি না। উত্তরে মহামান্য লুকাস বললেন, না, এটি শতভাগ বাস্তবতা। রুশানের মাথায় হাজারটা প্রশ্ন ভীর করতে লাগল। কিন্তু জিজ্ঞাস করার মত সঙ্গতি তখনও তার হয়নি।

দেরিতে হলেও নিরাপত্তা বিভাগ বুঝতে পেরেছিল জনাথন আব্রাহাম সেই পুরাতন উগ্রবাদী দলের একজন সক্রিয় সদস্য। কিন্তু বুঝেও তাকে ধরতে পারেনি তারা। জনাথন আব্রাহাম যেন সেফ হাওয়ায় মিশে গেছে। পেছনে কোন ক্লু’ই সে ছেড়ে যায়নি। ভিডিওতে এক মিনিট পূর্বে লোকটি তার চেয়ারে অবস্থান করছিল আর এক মিনিট বাদে যেন অদৃশ্য হয়ে গেল আপন অবস্থানেই। ভেলকিবাজির মত ঘটে গেল ঘটনাটা। সে ক্যাসিনো হতে বাইরে আসেনি এতটুকু নিশ্চিত নিরাপত্তা বিভাগের লোকেরা। কারণ চারদিক হতেই বিল্ডিং ঘিরে রেখেছিল নিরাপত্তা বিভাগের লোকজন। রাস্তায় রাস্তায় স্ক্যানার আর চেকপোস্ট বসানো হয়েছে। বিল্ডিং হতে বের হলেও সেগুলিকে পার করে এগিয়ে যাওয়া জনাথনের পক্ষে একেবারেই অসম্ভব কাজ হবে। কিন্তু যখন ভেলকিবাজির মত জনাথন হাওয়ায় মিলিয়ে গেল চোখের সামনে তখন নিজেদের চুল ছেড়া ছাড়া নিরাপত্তা বিভাগের আর কিছুই করার রইল না।

ধারণা করা হয় প্রথম এটমিক আক্রমণ চালাবার পূর্বেই মাটির বেশ গভীরে নিজেদের শহর তৈরি করেছিল গুপ্ত চার্চের উগ্রবাদীরা। তারা সেখান থেকেই সকল কাজ পরিচালনা করে থাকত। কিন্তু জনাথনকে কিভাবে উষ্ণ শহরে নিয়ে এসেছিল তার কোন হদিস তারা পায়নি। জনাথনের ফ্যামিলি ট্রি চেক করে দেখেছে মিকি। সে নিজেই এই পরিবারটাকে পোলার এরিয়া হতে উষ্ণ শহরে প্রতিস্থাপন করেছিল জনাথনের ৫ পুরুষ পূর্বে। জনাথনের অসুস্থতার কোন রিপোর্টও মিকির হাতে ছিল না। তবু ভিন্ন উপায়ে ডি. এন. এ. টেস্ট করে দেখেছে মূল পরিবারটির সাথে তার ডি. এন. এ.-র খুব বেশি পরিবর্তন ছিল না। অনেক তথ্য উপাত্ত ঘাটতে ঘাটতে মিকি এই সিদ্ধান্তে আসে যে জনাথনের এই পরিবারটি যখন মানব সভ্যতার পূর্বের অবস্থায় অবস্থান করছিল তখনই তাদের কেউ ঐ গোপন উগ্রবাদী চার্চের গ্রুপে যুক্ত হয়ে যায়। আর আক্রমণের পর পরিবারটির প্রায় সকল সদস্য মারা গেলে আলাদা করে কাউকে আর নিখোঁজ ধরা হয়নি। আর এই সুবিধাটিই কাজে লাগিয়ে জনাথনকে এই পরিবারে ঢোকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিল সেই উগ্রবাদী সংস্থা। কিন্তু কখন কিভাবে এই কাজটি করেছিল তারা সে সম্বন্ধে কোন ক্লু বের করতে পারেনি মিকি।

বিজ্ঞান কাউন্সিলের শুরু হতেই মহামান্য লুকাস সেখানে নিযুক্ত ছিলেন। প্রথমে সিনিয়র মেম্বার হিসেবে তাকে নিযুক্ত করা হয়। তারপর দীর্ঘ সময়ে দু’জন কাউন্সিল প্রধানের মৃত্যু ঘটে। তখন পর্যন্ত মেডিকেল সায়েন্সের তেমন উন্নতি ঘটেনি। কিন্তু আলট্রনসেপিয়েন্সদের সাথে সাথে পরে মানুষের জীবন ব্যবস্থারও উন্নতি ঘটতে থাকে। আর হামলা পরবর্তী পর্যায়ে মিকি সরাসরি বিজ্ঞান কাউন্সিলের মেম্বারদের দায়িত্ব গ্রহণ করে। নির্দিষ্ট পরিমাণে প্রোটিন দিয়ে তাদের বাঁচিয়ে রাখে মিকি। কাউন্সিলের ভেতরেই বেশ ছোট কয়েকটি অপারেশন করে কাউন্সিল সদস্যদের দীর্ঘায়ু নিশ্চিত করে। মিকির দায়িত্বে কাউন্সিলের সদস্যেরা সবাই প্রায় দীর্ঘ জীবন লাভ করে। মৃত্যু যেন তাদের ছুতে ভুলে যায়। তবে সবার ক্ষেত্রে ব্যাপারটা এক রকম ছিল না। কেউ কেউ এই দীর্ঘ জীবনকে সহ্য করতে না পেরে শেষে আত্মহত্যা করে বসত। আর কারও কারও ক্ষেত্রে কোষের পুনর্জন্ম থেমে যেত। একটা সময় পরে স্বাভাবিক মৃত্যুর কোলে তারা ঢলে পড়ত। তবে মিকি কখনোই মহামান্য লুকাসের ব্যাপারে কোন কার্পণ্য করেনি। প্রতি ১৫ দিন অন্তর অন্তর তাকে তার ব্যক্তিগত সেফ হোমে নিয়ে কোষের বেড়ে উঠার হার পরীক্ষা করত। কোথাও কোষের বেড়ে উঠার হার কম মনে হলেই সেখান থেকে ঐ কোষ গুলিকে সরিয়ে নতুন কোষ দিয়ে প্রতিস্থাপন করে দিত। আর এভাবেই বিজ্ঞান কাউন্সিলের প্রধান মহামান্য লুকাস দীর্ঘ জীবন লাভ করেন।

তবে মহামান্য লুকাসও এই জীবনের মোহ হারিয়ে ফেলেছিলেন। বসে বসে কেবল মাত্র মিকির কার্যক্রম দেখা আর অর্থহীন সকল আলোচনায় কাউন্সিল সদস্যদের হা-হুতাশ দেখতে দেখতে তিনি বেশ বিরক্ত হয়ে উঠেছিলেন। তার সময়ের কেউই বেঁচে নেই এখন। তিনি যাদের সাথে কাজ করেন তাদের কয়েক পুরুষ আগের মানুষদের সাথেও তিনি কাজ করেছেন। সর্বময় ক্ষমতার অধিকারী হয়েও তিনি নিজেকে বড় অসহায় মনে করতেন সময় সময়ে। তিনি অপেক্ষা করছিলেন তার অবস্থানে উপযুক্ত কাউকে বসিয়ে যাবার। কিন্তু এই দীর্ঘ জীবনে তেমন কাউই তার নজরে আসেনি। তবে এবারে তিনি আশার আলো দেখছেন। রুশান ছেলেটির মধ্যে যে আলো তিনি দেখতে পারছেন তাতে সে নিশ্চিন্তে এর উপর নিজের দায়িত্ব বুঝিয়ে দিতে পারে বলেই ধারণা করছেন। মিকি মহামান্য লুকাসের মনোভাব বুঝতে পারছিল। নিজের কক্ষে ফিরে যাবার পর মিকি নিজে থেকেই জানতে চাইল সত্যিই তিনি কাজটি করতে চান কি না। মহামান্য লুকাস অনেকক্ষণ ভেবে চিন্তে বললেন- হ্যাঁ, সত্যিকারেই আমি এমনটা করতে চাই।

এই সবের মাঝে মিকি আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছিল। আলট্রনসেপিয়েন্সদের যে ভ্রূণ হতে তৈরি করা হত সেই ভ্রূণের ক্লোনে সে আলট্রনসেপিয়েন্সের ডি. এন. এ. স্থাপন করে ল্যাবে বিশেষ প্রক্রিয়ার মাঝে তাকে বাড়িয়ে তোলে। এবং এবারে সফল ভাবেই সে কাজটি করতে সক্ষম হয়। একই নিয়ম অনুসরণ করে যখন ১০/১২ জন আলট্রনসেপিয়েন্স তৈরি করতে সে সক্ষম হয় তখন মহামান্য লুকাসকে তার এই এক্সপেরিমেন্ট সম্বন্ধে জানায়। মহামান্য লুকাস এই প্রথমবারের মত সত্যিকার অর্থে মিকির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। মানব সভ্যতাকে তার মত রেখেই যদি আলট্রনসেপিয়েন্সদের জন্ম দেয়া সম্ভব হয় তাহলে সেখানে আর কোন বাধাই থাকে না। আর মানব জীবনও প্রাকৃতিক ভাবে বেড়ে উঠতে পারে কোন কৃত্রিমতা ছাড়া। আর দ্বিতীয় কাজটি ছিল পৃথিবীর সকল স্থান হতে রেডিয়েশনের উপর নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আসা। মিকি বেশ সময় নিয়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা রেডিয়েশন গুলিকে তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসে। মানুষের বসবাস যোগ্য নিশ্চিত করেই মহামান্য লুকাসকে এই সুসংবাদ প্রদান করে। মহামান্য লুকাসও তাকে অনুমতি দেয় যাতে সে সকল স্থানে মানুষ দিয়ে আবারও ভরে ফেলতে পারে।

মিকি কখনোই পোলার এরিয়া হতে সকল মানুষকে সরিয়ে নেবার পক্ষে ছিল না। তার যুক্তি অনুসারে যে কোন ধরণের বিপর্যয় আসতে পারে। তার নিজের নিয়ন্ত্রণেরও পরিবর্তন হুট করে ঘটে যেতে পারে। আর উষ্ণ শহরের সম্পূর্ণ দায়িত্ব যখন তার উপরই থাকে তখন সকল মানব জাতীকে নিয়ে এই রিস্ক সে কখনোই নিতে রাজি ছিল না। তাই সে ধীরে ধীরে অল্প অল্প মানুষ বিভিন্ন এলাকাতে ছড়িয়ে দিচ্ছিল। জাতিগত ভাবে তাদের পূর্ব পুরুষেরা যেসব এলাকায় বসবাস করত সে তাদের সেভাবেই ঐ সকল এলাকায় ফিরিয়ে নেবার চেষ্টা করে যাচ্ছিল। পুরানো পৃথিবীটা নতুন রূপে আবারও ফিরে আসছিল। আলট্রনসেপিয়েন্সদের নিয়ে অতি আগ্রহ কিংবা ভীতি অথবা অবজ্ঞা মানুষের মধ্য থেকে দূর করার জন্যে প্রায়ই আলট্রনসেপিয়েন্সদের মানব সমাজে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে নিয়ে আসা হত। সেমিনার করে করে তাদের মাঝে পার্থক্য আর মৌলিক বন্ধন গুলি সবাইকে বুঝিয়ে দেবার চেষ্টা করে যেতে লাগল মিকি। আর এভাবেই ধীরে ধীরে আলট্রনসেপিয়েন্স আর মানুষের মধ্যকার দূরত্ব কমে আসতে লাগল।

রুশানকে এখন ঠিক মানুষ কিংবা আলট্রনসেপিয়েন্স কোনটাই বলা চলে না। সে দুটি জাতীর সংমিশ্রণে তৈরি নতুন কিছু। মহামান্য লুকাস যখন তাকে তার অবস্থানে আসার আহ্বান জানায় তখন সে শুধু বোকার মত চেয়ে থাকা ছাড়া আর কিছুই করতে পারছিল না। সবশেষে বিজ্ঞান কাউন্সিলের সকল সদস্যদের অনুমোদন আদায় করে মিকি মহামান্য লুকাসের অবস্থানে বিজ্ঞান কাউন্সিলের নতুন সভাপতি হিসেবে রুশানকে অবস্থান দেয়। মহামান্য লুকাসের অনুরোধেই উষ্ণ শহরে তার পূর্বপুরুষদের একটা অবস্থানে তাকে সাধারণ একটা কাঠের বাড়ি তৈরি করে দেয় মিকি। তবে খামারের কাজের জন্যে বরাদ্দ দেয় ২ টি কর্মী রোবট। মহামান্য লুকাস পরবর্তী ৩টা বছর সেখানেই কাটিয়ে দেন। তৃতীয় বছরের শেষের দিকে তিনি স্বাভাবিক নিয়মেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন।

পূর্ব নির্দেশনা অনুযায়ী মহামান্য লুকাসকে তার নতুন বাড়ির উত্তরদিকের পাহাড়ের একটা গুহায় সমাহিত করা হয়। তবে মিকি শুধু তাকে সমাহিত করেই ক্ষান্ত হয়নি। সে গুহাটাকে একটা ছোটখাটো যাদুঘরে পরিবর্তন করে নেয়। এখানে সকলের প্রবেশাধিকার রয়েছিল। সবাই এখানে এসে মহামান্য লুকাসের জীবনের শুরু হতে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি পদক্ষেপই জানার সুযোগ পেত। তার অবদানগুলি আলাদা করে হলোগ্রাফিক ছবির মাধ্যমে দেখানোর ব্যবস্থা করা হত। তার গুরুত্বপূর্ণ কথা গুলিকে আলাদা করে সংরক্ষণ করা হয়েছিল। চাইলেই সকলে সেই গুরুত্বপূর্ণ কথা গুলি হলোগ্রাফিক চিত্রে দেখতে পারত।

রুশানকে মানব সভ্যতা আর আলট্রনসেপিয়েন্স উভয়েই তাদের প্রতিনিধি হিসেবে মেনে নিয়েছিল। আর এই কারণেই এই দুই সভ্যতার মধ্যকার দূরত্বকে সে কমিয়ে আনতে পেরেছিল। কোন প্রকৌশলী, ডাক্তার, সায়েন্টিস্ট যাতে আবারও কোন জনাথনের আয়ত্তে না আসে সেই ব্যবস্থা করেছিল রুশান। সে সবাইকে বাধ্যতা মূলক কাউন্সিলিং করার নির্দেশনা প্রদান করেন। আর সেই কাউন্সিলিং সেশন গুলিতে সায়ক্রাটিস্টের পাশাপাশি মিকিও অংশগ্রহণ করত। প্রতিটা মানুষের আলাদা আলাদা প্রোফাইল তৈরি আর আপডেট করা হত প্রতি সেশনে। কোথায় কাকে কখন কতটুকু পরিমাণে কাজ করানো হবে তা সেই প্রোফাইল হতেই বের করা হত। আর এভাবেই গোপন চার্চের সেই মৌলবাদী দলটির দীর্ঘমেয়াদি হামলার সকল ষড়যন্ত্র বানচাল করে দিতে সক্ষম হয় সে। হয়ত তারা আবারও আক্রমণ করবে। তবে এইবার আর তাদের ছেড়ে দেয়া হবে না। আক্রমণের পাল্টা আক্রমণ তাদেরও করবে এমনটাই সিদ্ধান্ত নিয়ে রেখেছে বিজ্ঞান কাউন্সিল আর নিরাপত্তা বিভাগ।

মানব সভ্যতা হারিয়ে যাবে এমনটা কখনোই সম্ভব নয়। আলট্রনসেপিয়েন্স হয়েই তাদের বাঁচতে হবে এমন কোন ধরাবাঁধা নিয়মও কোথাও নেই। তারা সকলেই বেঁচে থাকবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক কাতারে দাড়িয়ে....





════════════════════════════════
সবাইকে ঈদের শুভেচ্ছা


ঈদ মোবারক
Read More »
Tuesday, August 4, 2015

অন্ধকারের মানুষের আত্মকথা



দিনের আলোর সাথে এখন আর আমার কথা হয় না। আলোর অহমিকায় দিন বরাবরই স্বার্থপরের মত আচরণ করে গেছে এই আমার সঙ্গে। আমি যতবারই আলোক উজ্জ্বল দিনকে আমার কথাগুলি বলেছিলাম, ঠিক ততবারই সে আমার কথা গুলি অন্য সকল কথার আড়ালে লুকিয়ে নিয়েছে। আমি অবাক হয়ে দেখেছি ঐ শত সহস্র কথার ভিড়ে আমার কথা গুলিকে হারিয়ে ফেলতে, আমাকে হারিয়ে ফেলতে।
আমি এখন রাতের সাথে কথা বলি। রাতের কাছে আলো না থাকতে পারে কিন্তু তার সংগ্রহে থাকা স্নিগ্ধতা নিয়ে সে কখনোই বড়াই করে বেড়ায় নি। বরং আগ্রহী শ্রোতার মত নীরবে সে আমার কথা গুলি শুনে গেছে খুবই মনোযোগ দিয়ে। কখনোই কোন কথা শুনে বিরক্তি ভাব ফুটিয়ে তোলেনি, কিংবা বৈরি মনোভাবের প্রকাশ ঘটাবার অবকাশ দেয়নি।
বরাবরই যখন আমার কথা ফুরিয়েছে তখন সে বিদায় নিয়েছে আলগোছে। আমার দুঃখ গুলি, বিষণ্ণতায় ভরা কথা গুলি, আমার কষ্ট গুলি, অপূরণে পরিপূর্ণ অনুভূতির অভিব্যক্তি গুলি সে বয়ে বেড়িয়েছে দুনিয়ার এই প্রান্ত থেকে ঐ প্রান্তে। সারা দুনিয়া খুঁজে ঐসবের বিপরীতে আমার জন্যে কুড়িয়ে নিয়ে এনেছে প্রশান্তি। আত্মতৃপ্ততায় সিক্ত করে আবারও আমার জমে থাকা কথা গুলি শুনতে বসে পড়েছে গা ঘেঁষিয়ে।
কখনো কখনো তার এইসব কাণ্ডকারখানা দেখে বিরক্তও হয়েছি। নিজের ক্ষোভ ঢেলে তার স্নিগ্ধতাকে তিরস্কার করেছি। অপমানের ষোলকলা পূর্ণ করে দূর দূর করে তাকে দূরে ঠেলে দিয়েছি। তার দেয়া উপহারের আত্মতৃপ্তিকে রাজপথে ঢেলে দিয়ে আমার নোংরা নগ্ন পায়ে মাড়িয়ে দিয়েছি তারই সামনে। উপহাস করেছি তার এই বোবা অস্তিত্বকে নিয়ে।
এতকিছুর পরেও সে তার মনে বিদ্বেষ নিয়ে ফিরে আসেনি, আনে নি কোন পরিবর্তন তার কোমলিয়তায়। কেড়ে নেয়নি তার দেয়া উপহারের ঐ আত্মতৃপ্তিগুলিকে, ছুড়ে দেয়নি কোন অভিশাপ তার বোবা অস্তিত্বকে নিয়ে উপহাস করায় শাস্তি রূপে। বরং আরও বিনীত হয়ে পরম বন্ধুর মত ফিরে এসেছে। নিজের অক্ষমতায় লজ্জা পেয়ে পশ্চিম দিগন্ত রাঙ্গা করে তাতে মুগ্ধ হতে বাধ্য করেছে। কোমল সন্ধ্যা হতে গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে এই আমার কথা গুলিকে মনে মনে সাজিয়ে নেবার জন্যে। আর তারপর নির্জন রাতে আবারও গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনে গেছে আমার সকল অভিযোগ, অপ্রাপ্তি আর অশান্ত সকল আর্তনাদ গুলিকে। আমি বরাবরই তার এই মহান হৃদয়ের সামনে নিজেকে হারিয়েছি। হারিয়েছি মনের অশান্ত অংশটাকে তার কোমল নিস্তব্ধ অন্ধকারে।
   
  
আমি অন্ধকারের মানুষ। আলোর দেশে নিরুদ্দেশ হয়ে অন্ধকারেই আপন পথ খুঁজে নিয়েছি অবসরে…
 

 

   

   

    
Read More »
Wednesday, July 29, 2015

প্রযুক্তি কথনঃ Shiela USB Shield রিভিউ

ডেক্সটপ কিংবা ল্যাপটপে উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহার করছেন কিন্তু ভাইরাস সম্বন্ধে জ্ঞাত নন এমন লোক সম্ভবত খুঁজে পাওয়া যাবে না। কম-বেশি সবাই আমরা এই “ভাইরাস” শব্দটার সাথে পরিচিত। আর এই ভাইরাস ছড়ানোর অন্যতম একটি মাধ্যম হল Removable Storage যা আমাদের কাছে Pen Drive কিংবা Memory Card নামে সুপরিচিত।

Removable Storage হতে এইসব ভাইরাস গুলি Autorun ফিচার ব্যবহার করে ছড়িয়ে পড়ে আপনার সিস্টেমে, আর তারপর শুরু করে দেয় তার কার্যক্রম। আপনি ভালো কোন এন্টিভাইরাস নিয়মিত ডাটাবেস আপডেট করে ব্যবহার করলে অনেকাংশেই এইসকল ভাইরাসের হাত থেকে নিরাপদ থাকা যায়। তবুও অনেক অসতর্ক মুহূর্তে সিস্টেম সেটিংস এর কারণে এন্টিভাইরাসের বলয় পেরিয়ে এই ভাইরাস অবস্থান নেয় আপনার সিস্টেমে।

এই সমস্যা থেকে ব্যবহারকারীকে পরিত্রাণ দেবার জন্যে বিভিন্ন সফটওয়্যার নির্মাতা বিভিন্ন ধরণের সিকিউরিটি সফটওয়্যার তৈরি করেছে। তেমন একটি সফটওয়্যারের নাম হচ্ছে “Shiela USB Shield”। অনলাইনে এমন আরও কিছু সফটওয়্যার থাকলেও তাদের বেশির ভাগই ক্রয় করে ব্যবহার করতে হয়। কিন্তু Shiela USB Shield সম্পূর্ণ বিনামূল্যের সফটওয়্যার, যা  Martin P. Rizal নামের ডেভেলপার LGPL লাইসেন্সের আলতায় অবমুক্ত করেছেন।

Shiela USB Shield এর ফিচার সমূহঃ



  • Autorun.inf এবং তার সাথে সম্পর্কিত এক্সিকিউটেবল ফাইল গুলিকে ব্লক করে।
  • শর্টকাট ভাইরাস ফাইল গুলিকে ডিলিট অথবা ফ্রিজ করে রাখতে সক্ষম।
  • শর্টকাট ভাইরাস আক্রান্ত Removable Storage হতে আসল ফাইল/ফোল্ডার পুনরুদ্ধার করে।
  • Real Time Protection প্রদান করে।
  • Removable Storage ভাইরাস স্ক্যান করে।



  • USB vaccination ফিচার সংযুক্ত রয়েছে। যা ব্যবহার করে আপনার Removable Storage কে আপনি Autorun.inf এর হাত থেকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন।



  • ভাইরাসের কারণে ড্রাইভ হতে Hide হয়ে যাওয়া ফাইল গুলিকে পুনরুদ্ধার করে।
  • USB Mass storage কে সিস্টেমে ব্যবহার বন্ধ করতে পারে।
  • USB Mass storage কে সিস্টেমে Right Protect সুবিধা প্রদাণ করে।



সফটওয়্যারটির ডাওনলোড লিংকঃ অফিসিয়াল | মিরর
সফটওয়্যারটির পোর্টেবল ভার্সনের ডাওনলোড লিংকঃ Shiela USB Shield 3.4.0.0 [Portable]

সফটওয়্যারটি Windows 2000 থেকে শুরু করে যে কোন উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে চালানো যাবে। তবে এটি ব্যবহার করার জন্যে আপনার সিস্টেমে অন্তত .NET Framework 2.0 (x86 | x64) ইন্সটল করা থাকতে হবে।





Read More »
Monday, July 27, 2015

অনুগল্পঃ মোহনার অপার্থিব ছায়া



হুট করেই স্যাঁতস্যাঁতে একটা অনুভূতি ঘিরে ধরল মোহনাকে। মনে হচ্ছে জোড় করে কেউ তার গা ভরে শ্যাওলা ঘষে দিচ্ছে । বিরক্তিকর একটা অনুভূতি। হাত থেকে মোবাইলটা রেখে বিছানায়ই একটু আড়মোড়া ভাঙ্গবার জন্যে হাত-পা ছুড়ে দিল। তারপর আবার মোবাইল হাতে ফেসবুকে ডুবে গেলো।

বেশ অনেকক্ষণ পার হবার পরেও যখন সেই অনুভূতিটাকে পিছু ফেলতে পারছিল না তখন বিরক্ত হয়েই বিছানায় মোবাইল ফেলে ওয়াশরুমের দিকে চলে গেল। চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে আবার ফিরে আসলো রুমে। বাইরে এলোমেলো বাতাস বইছে, গত ক’দিনের তুলনায় পরিবেশ আজ বেশ ঠাণ্ডা। সম্ভবত বৃষ্টিও শুরু হয়ে যাবে কিছুক্ষণের মাঝেই। বিছানায় আর এখন যেতে ইচ্ছে করছে না। যদিও বাইরে অন্ধকার, তবুও জানালার পাশে এলোমেলো বাতাসেই বসতে ইচ্ছে হচ্ছে।

জানালাটার কাঁচ অল্প খুলে দিয়ে বসে পড়লো পাশে থাকা সোফাটার উপর। কিন্তু মোবাইলটা তো ছেড়ে এসেছে বিছানাতেই, তাই আবার উঠে গিয়ে বিছানা হতে মোবাইলটা তুলে নিয়ে এসে বসল সোফায়। ফেসবুকটা চালু করে একটা স্ট্যাটাস লিখল- ” অপার্থিব অন্ধকারে এলোমেলো হাওয়ার তোড়ে উড়ছে মন, উড়ছে অনুভূতিরা”। পোষ্ট দেবার কিছুক্ষণের মাঝেই বন্ধুরা তাতে লাইক দিতে থাকলো। দু’একজন মজার কমেন্টও করলো।

ওগুলির রিপ্লাইই দিচ্ছিল সে, এর মাঝে শুরু হয়ে গেলো ঝুম বৃষ্টি। বাতাস আর বৃষ্টির তোড়-জোরেই জানালা বন্ধ করতে হল। তারপর আবার গিয়ে বিছানায় এলিয়ে পড়লো মোবাইল হাতে। এর মাঝে আরও কয়েকজন মন্তব্য করেছে তার ঐ পোষ্টে। তবে সেসবের মাঝে অপরিচিত একজনের মন্তব্য চোখে পড়ল।

মোহনা সাধারণত পাবলিক পোষ্ট দেয়না। তার সব পোষ্টই মোটামুটি বন্ধুদের দেখার মত করে দেয়। সেখানে অপরিচিত কারও মন্তব্য আসার প্রশ্নই আসে না। চিন্তা করতে করতেই মনে পড়ল আজ দুপুরে পাশের বাসার পিচ্চিটা এসেই তার মোবাইল হাতে নিয়েছিল গেইমস্‌ খেলার জন্যে। হয়তো সেই সময়েই ভুল করে পিচ্চিটা ঝুলে থাকা কোন রিকোয়েস্ট একসেপ্ট করে নিয়েছে। আর সেখান থেকেই এসেছে এই অপরিচিত। এই একজনই এড হয়েছে নাকি আরও এসেছে এই ফাঁকে, কে জানে? এখন আর চেক করতে ইচ্ছে করছে না, কাল বসে দেখতে হবে সেটা।

তবে মন্তব্যটা কেমন যেন। হয়তো অপরিচিত বলেই মন্তব্যটা ভালো মনে হয়নি তার। লিখেছে- “অপার্থিবে উড়ে বেড়ায় এমন অনেক কিছুই পার্থিব এই জগত মনে নিতে পারে না”। এটা কেমন মন্তব্য। আধারটাকে বোঝাতে না হয় অপার্থিব শব্দটা ব্যবহারই করেছিল, কিন্তু তাই বলে প্রসঙ্গের বাইরে গিয়ে এমন একটা মন্তব্য করতে হবে? নাহ্, ঝামেলা বিদায় করতেই হবে। নয়তো দেখা যাবে প্রতি পোষ্টেই এমন অপ্রাসঙ্গিক কথা টেনে আনছে।

ভাবনা অনুযায়ী কাজ করতে গিয়ে আইডিটার উপর ক্লিক করলো, আর অবাক হয়ে দেখল আইডিটা নেই। হয় এরই মাঝে আইডি ডি-একটিভ করেছে লোকটা আর নয়তো মন্তব্যের রিপ্লাই না পেয়ে নিজেই তাকে ব্লক করেছে। যাক, তবুও নিজে থেকেই ঝামেলার বিদায় হয়েছে, এই শান্তি।

বৃষ্টি শুরু হবার পরপরই আরও ঠাণ্ডা লাগতে শুরু করেছে। মনে হচ্ছে শ্রাবণ মাসে মাঘ মাসের শীত নেমে এসেছে। অল্প অল্প কাপনিও হচ্ছে ঠাণ্ডায়। এত কিছুর মাঝেও সেই স্যাঁতস্যাঁতে অনুভূতিটার পিছু ছাড় হয়নি। এখনো সেই একই অনুভূতি তাড়া করে ফিরছে।

বিরক্তি যখন একদম চরমে ঠিক তখনই ঘটল ঘটনাটা। কি যেন তার ভেতর পর্যন্ত ছুঁয়ে গেলো। এই অনুভূতিটা এতটাই বাস্তব যে, তার অন্তরও সেই ছুঁয়ে দেয়া অনুভূতিটা টের পাচ্ছে। ঠিক এর পরপরই চোখ পড়লো দেয়ালে বাধাই করা নিজের ছবিটার দিকে। তবে ঠিক ছবিটা নয়, ছবির ফ্রেমের উপর গ্লাসে যে ছায়াটা দেখা যাচ্ছে সেটাই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে।

আবছা মত প্রায় মানুষের আকৃতির কিছু একটা ভেসে আছে, আর সেটারই রিফ্লেকশন হচ্ছে ফ্রেমের গ্লাসটাতে। চট করেই চোখ ঘুরিয়ে উল্টো দিকে দেখল মোহনা। মাটি থেকে দু’তিন হাত উঁচুতে কি জানি একটা ভেসে বেড়াচ্ছে। ওটা দেখে এতটাই অবাক হল যে চিৎকার করতেও ভুলে গেলো। কিংবা কে জানে, হয়তো ভয়েই চিৎকার করতে পারছিল না।

দেখতে মানুষের আকৃতির মত হলেও ওটাকে মানুষ বলা ঠিক হবে না। আবছা একটা ছায়ার মত, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে ওটাও যেন তার দিকে তাকিয়ে আছে। স্যাঁতস্যাঁতে অনুভূতিটা আরও বাড়তে শুরু করেছে এখন। আরও মনে হচ্ছে ভাসতে থাকা ঐ ছায়াটা তার ভেতর পর্যন্ত সব পড়ে নিচ্ছে। নিজের ভেতর যেন আর কিছুই লুকানো নেই।

ধীরে ধীরে সেই উড়ন্ত ছায়াটা কাছে আসছে তার। এইতো আর এক হাত দূরত্বে আছে, আরও কাছে আসছে। আরও কাছে….. হুট করেই সব যেন অন্ধকার হয়ে গেলো।







সকালে এসে আম্মুই ডেকে দিয়ে গেলো। সোফাতে শুয়েই ঘুমিয়ে পড়েছিল সে। হুট করেই রাতের ঘটনাটা মনে পড়ে গেলো। নির্ঘাত স্বপ্ন দেখেছে। এমন কি সত্যিই হয় নাকি? রাতের স্ট্যাটাসের ঐ অপার্থিব শব্দটা আর ঐ শব্দ নিয়ে করা মন্তব্যটা নিশ্চয় মাথায় গেঁড়ে বসেছিল। আর তাই ঘুমবার পরপর সেটা নিয়েই উদ্ভট স্বপ্ন দেখেছে। নিজের মনে হাসতে হাসতে গিয়ে ওয়াশ রুমে ঢুকল। ব্রাশে পেস্ট লাগিয়ে দাঁত মাজতে মাজতে আয়নায় নিজেকে দেখছিল। আবার সেই স্যাঁতস্যাঁতে অনুভূতিটা যেন ফিরে আসছে।

দ্রুত করে ব্রাশ শেষে চোখে মুখে পানি দিতেই আবার ব্যাপারটা ঘটতে শুরু করল। ঝট করে চোখ উঠিয়ে আয়নায় দেখল। নিজের দিকে কিংবা আরও ভালো করে বলতে গেলে নিজের চোখের দিকে তাকিয়েই শিউরে উঠলো সে। দেখতে পেলো সেখানে যেন একের পর এক মোহনা দাড়িয়ে আছে তার সামনে। কিন্তু কেউই মাটিতে দাড়িয়ে নেই। সবাই মাটি থেকে একটু উঁচুতে গতকালের দেখা ঐ ছায়াটার মত ঝুলছে…



Read More »
Monday, July 6, 2015

স্মার্টফোন ব্যবহার করে এক শব্দে ফেসবুক প্রোফাইলের নামকরণ করার পদ্ধতি



পূর্বে আলোচনা করেছিলাম, কিভাবে ডেক্সটপ কিংবা ল্যাপটপ ব্যবহার করে ফেসবুক প্রোফাইলের এক শব্দে নামকরণ করা যায় সেই পদ্ধতি। কিন্তু হালের যুগে সকলের হাতে হাতে স্মার্টফোন রয়েছে। আর যদি সেই স্মার্টফোন থেকেই কাজটি করা যায় তাহলে কাজটি আরও সুবিধা জনক হয়। আর সেই তাগিদেই আজকের পোষ্টের অবতারণা।

মোবাইলের জন্যে আমাদের দুটো App প্রয়োজন-

১. মোবাইল ব্রাউজার
২. প্রক্সি পরিবর্তনের এ্যাপ।

মোবাইলের ব্রাউজার হিসেবে আপনি যে কোন ব্রাউজারই ব্যবহার করতে পারবেন। আমি আমার কাজের সুবিধার্থে এখানে Opera ব্রাউজার ব্যবহার করেছি। অন্যদিকে প্রক্সি পরিবর্তনের অনেক এ্যাপই এখন Play Store এ পাওয়া যায়। তার যে কোনটি ব্যবহার করলেই আপনার কাজ হবে। আমি এখানে 'One Click VPN' এ্যাপটি ব্যবহার করেছি। আপনারা সরাসরি Play Store থেকে এ্যাপটি ইন্সটল করে নিতে পারেন, কিংবা সমস্যা হলে এই লিংক থেকে ডাওনলোড করে ইন্সটল করতে পারেন।


ব্রাউজার এবং প্রক্সি এ্যাপ ইন্সটলের পর নিচের ধাপ গুলি অনুসরণ করুন-


ধাপ ১ : প্রথমে Opera বা আপনার মোবাইল ব্রাউজার দিয়ে m.facebook.com অথবা mbasic.facebook.com সাইটে প্রবেশ করুন। এরপর আপনার Email/Phone/UserName এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগইন করুন।


ধাপ ২ : ফেসবুকে লগইন সম্পন্ন হলে আপনার প্রক্সি পরিবর্তনের সফটওয়্যার চালু করুন। যেমন আমার ক্ষেত্রে আমি “One Click VPN” সফটওয়্যারটি চালু করলাম। এ্যাপ সচল হবার কিছুক্ষনের মাঝেই সার্ভার লিস্ট চলে আসবে।


ধাপ ৩ : এরপর সার্ভার লিস্ট হতে আপনি Indonesia এর একটি সার্ভার খুঁজে বের করে সিলেক্ট করুন।


সিলেক্ট করার পর সেটার রং পরিবর্তন হবে।


এখন স্ক্রিনের নিচে অবস্থিত “Connect” বাটনে ক্লিক করুন।
  
ধাপ ৪ : VPN কানেকশন তৈরির পূর্বে একটি সতর্কবানী দেয়া হবে। আপনি “I trust this application.” লেখাটির সামনে চেক বক্সে ক্লিক করে “OK” বাটনটি সিলেক্ট করুন।


ধাপ ৫ : কিছুক্ষন অপেক্ষার পর আপনার মোবাইলের স্ক্রিনের উপরের বাম পাশে একটি চাবির চিহ্ন দেখতে পাবেন। এবং একেবারে স্ক্রিনের নিচে লেখা আসবে “Connected, Enjoy!”। অর্থাৎ আপনি VPN সার্ভারের সাহায্যে ইন্দোনেশিয়ান প্রক্সি ব্যবহার করে এখন যে কোন সাইট ব্রাউজ করার জন্যে প্রস্তুত।


ধাপ ৬ : এরপর “One Click VPN” এ্যাপ মিনিমাইজ করে আপনার ব্রাউজার (আমার ক্ষেত্রে OperaMini) এ চলে আসুন। ফেসবুক হোম লোড হবার পর একদম নিচের দিকে অবস্থিত “Settings & Privacy” তে ক্লিক করুন।


ধাপ ৭ : এরপর Settings ড্যাশ থেকে General সিলেক্ট করুন।


ধাপ ৮ : General ড্যাশ লোড হবার পর সেখান থেকে Language লেখাটির উপর ক্লিক করুন।


ধাপ ৯ : এখন Language লিষ্ট হতে “Bahasa Indonesia” সিলেক্ট করুন।


ধাপ ১০ : পুনরায় আপনাকে ফেসবুক হোমে নিয়ে যাবে। এখন আবারও নিচে নেমে “Pengaturan & Privasi” লেখাটির উপর সিলেক্ট করুন।


ধাপ ১১ : এরপর Settings ড্যাশ থেকে “Umum” সিলেক্ট করুন।


ধাপ ১২ : Umum ড্যাশ লোড হবার পর “Nama” সিলেক্ট করুন।


ধাপ ১৩ : এখন তিনটি ইনপুট বক্স দেখতে পাবেন, এগুলি যথাক্রমে ‘First Name’ ‘Middle Name’ এবং ‘Last Name’ নির্দেশ করে। আপনি ‘Middle Name’ এবং ‘Last Name’ বক্সে থাকা সকল লেখা মুছে দিন এবং প্রথম বক্সে আপনি যে নামে আইডির নামকরণ করতে চাইছেন তা লিখুন। এবং সব শেষে “Tinjau Perubahan” লেখা বাটনের উপর ক্লিক করুন।


ধাপ ১৪ : নাম কনর্ফাম করার জন্যে আপনাকে পুনরায় পাসওয়ার্ড দিতে হবে। বক্সে পাসওয়ার্ড লিখে “Simpan Perubahan” লেখা বাটনে ক্লিক করুন।


ধাপ ১৫ : Settings ড্যাশ রিলোড হলেই দেখতে পাবেন Nama এর নিচে আপনার দেয়া এক শব্দের নাম দেখাচ্ছে। এখন আবার Bahasa লেখাটিতে (৬ নম্বর) ক্লিক করুন।


ধাপ ১৬ : পুনরায় ভাষা নির্ধারণ লিস্ট দেখতে পাবেন। সেখান থেকে “English (US)” অথবা আপনি যে ভাষায় ফেসবুক ব্যবহার করতে ইচ্ছুক সেই ভাষা নির্বাচন করুন।


ভাষা নির্ধারণ করার পর পুনরায় ফেসবুক হোমে আপনাকে নিয়ে আসা হবে। এবার আপনি উপরের Menu হতে Porfile লেখাটিতে ক্লিক করুন। আপনার প্রোফাইল পেইজ লোড হবার পর সেখানে আপনার নামের স্থানে আপনার প্রদাণকৃত এক শব্দেরনামই দেখতে পাবেন।



পূর্বেই উল্লেখ করেছি যে এই সুবিধাটি বিশেষ একটি পদ্ধতি (ইন্দোনেশিয়া প্রক্সি সেটিংস্‌) ব্যবহার করে উপভোগ করা যাবে। কিন্তু আপনাকে বুঝতে হবে যে উক্ত সুবিধাটি শুধুই নির্দিষ্ট দেশের জন্যে দেয়া হয়েছিল। আমরা সেই সুবিধাটি ব্যবহার করেই এই “এক শব্দের নাম” সুবিধাটি নিচ্ছি। কিন্তু ফেসবুক পলিসি অনুসারে এটি আপনার সত্যিকারের নাম হলেও তা গ্রহনযোগ্য নয়। তাই এই সকল Single Name বা এক শব্দের নামের আইডি গুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ফেসবুক ভেরিফিকেশন এর মধ্যে পড়ে যায়। আর সেখান থেকে নামের সঠিক মিল খুঁজে পাওয়া যায় না বলেই রিকোভার করা সম্ভব হয় না। তাই এই পদ্ধতি অনুসরণ করে আইডির নাম করলে তা নিজ দায়িত্বে করবেন।



…Happy Facebooking…

……. Happy Blogging …….








Read More »
 
;