দেবী, যে কল্পলোকের অপ্সরী নয়।
সে দেবী, অনাহুতের রক্ষাকারী। যে চোখে চোখে রাখে বিপদে পড়া মানুষকে। চরম বিপদের মুহূর্তে তার হাতটি বাড়িয়ে দেয়। সে দেবী, যে মূর্তির মূর্ত অবস্থা থেকে বের হয়ে আসে তার প্রার্থনাকারীকে আগলে রাখতে।
এমনই এক দেবীর সাথে পরিচয় ঘটবে এই উপন্যাসটিতে। যেখানে দেবী বলতেই আমাদের মনের আঙ্গিনাতে একটা মূর্তির রূপ চলে আসে সেখানে দেবীকে দেখা যাবে মানুষের ভেতরে, মানুষের জন্যে।
মিসির আলি সাহেব চেষ্টা করেছেন এই দেবীকে আবৃত করে রাখা রহস্যের কুয়াশাকে ভেদ করে তার যুক্তি উপস্থাপন করতে। হয়তো তিনি পেরেও যাবেন, কিংবা যুক্তি উপস্থাপনের মাঝেই তাকে থেমে যেতে হবে। কি হবে তা জানা যাবে উপন্যাসেই।
এখানে দুটো আলাদা আলাদা পরিবেশে থাকা মেয়ের দেখা পাওয়া যাবে। যার একজন গ্রাম থেকে শহরে এসেছে স্বামীর হাত ধরে। আর অন্যজন এই শহরেই বড় হয়েছে। কিন্তু কোন অদ্ভুতভাবে তাদের মাঝে একটা যোগসূত্র তৈরি হবে। সেই যোগসূত্র ধরেই এগিয়ে যাবে গল্প একদম শেষ পর্যন্ত।
এর মাঝে রানু নামের মেয়েটির স্বামী স্ত্রীর অসুস্থতার কারণে সাহায্য চাইবে মিসির আলি সাহেবে। সেখানেই পাঠক খুঁজে পাবেন এক অদ্ভুত মানুষের। যে মানুষের সঙ্গ পছন্দ করে না, অথচ কোন একজন কেউ বিপদে আছে বুঝলে সে ঠিকই তার সর্বাত্মক চেষ্টা করবে তাকে সহায়তা করার। চেষ্টা বলতে শুধুই চেষ্টা বললেই হয়তো কম হয়ে যাবে। বলা উচিৎ প্রাণপণ চেষ্টা করবে। অথচ যার জন্যে এই চেষ্টা, এই কষ্ট করা তার সাথে ব্যবহারটা হবে পুরোপুরি বিপরীত। তখন দেখা যাবে মিসির আলি যেন ঐ ব্যক্তিটির সাথে দায়সারা ভাবে কথা বলছে, যেন ব্যক্তিটি দ্রুত চলে গেলেই তিনি হাঁপ ছেড়ে বাঁচেন।
ওদিকে নীলুর এক অজানা মানুষের জন্যে নিজের ভেতর একপ্রকার উতলা অনুভূতি জন্ম নেবে। ছোট বোনের পাশে থেকে যে হীনমন্যতায় ভুগে আসছিল সেই ছোটবেলা থেকে সেই হীনমন্যতা এই অজানা অচেনা মানুষের বিপরীতে এক আকর্ষণ শক্তি হিসেবে কাজ করবে তার মনে। কিন্তু এই ব্যাপারটি সে কারো সাথেই বলতে পারবে না। নিজের অনুভূতির শক্তি যাচাই করার জন্যে নিজ প্রফেসর মিসির আলির কাছে গিয়েও নিজের এই অসহায় অবস্থার কথা বলতে পারবে না। অথচ কিছু না বলার পরও দেবী ঠিকই বুঝে নেবে। যে বিপদের নীলু এগিয়ে যাচ্ছে, সে বিপদ হতে রক্ষা করতে এগিয়ে আসবে দেবী।
গল্পটা পড়ার সময় যতটা বেশি রোমাঞ্চ কাজ করবে তারচেয়েও বেশি আকর্ষণ করবে পরবর্তী ধাপে কি হয় সেটা জানার। এটা এমন একটা গল্প যেখানে খুব সাধারণ কিছু মানুষের কথা বলা হয়েছে, যারা আমাদের আশে পাসেই বসবাস করে। অথচ তাদের মাঝেই যে অসাধারণ কিছুর বসবাস সেটা গল্পের মাঝেই দেখাবেন গল্পকার। জানা যাবে ঐ সময়কার শহর আর গ্রামের মানুষ গুলির ভিন্ন ভিন্ন মানসিক অবস্থা।
শেষ পর্যন্ত কিভাবে দেবী এই মানুষের রূপে মানুষের জন্যেই এগিয়ে আসে তা জানা জানতে আপনাকে গল্পের শেষ পর্যন্ত আকর্ষণ করে যাবে।
দেবী গল্পটি পড়তে হলে প্রদত্ত লিংক গুলোতে দেখুন-
লিংক ১ || লিংক ২ || লিংক ৩